ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

রুমানা-জাহানারাদের ফেরার সুযোগ 

রুমানা-জাহানারাদের ফেরার সুযোগ 

জাতীয় দলে ফিরছেন অভিজ্ঞ জাহানারা (বাঁয়ে) ও রুমানা।

সেকান্দার আলী

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪ | ১৭:৫৯ | আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ | ১৮:৪৪

সালমা খাতুনের নেতৃত্বের নারী ক্রিকেটে বড় সাফল্য এসেছিল ২০১৮ সালে। ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের আগে দেশের ক্রিকেটের বড় সাফল্য ছিল মেয়েদের এশিয়া কাপ জয়। নিরপেক্ষ ভেন্যু মালয়েশিয়ায় ভারতকে হারিয়ে টি২০ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সালমারা। সেই ভারত নারী ক্রিকেট দলের কাছে দেশের মাটিতে পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ।

একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়ে গড়া নারী দল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার কাছেও হয়েছে নাকাল। অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতের কাছে হোয়াইটওয়াশের ঘটনা চোখ খুলে দিয়েছে জাতীয় দল নির্বাচকদের। ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে থাকা বাংলাদেশ নারী দলকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চান প্রধান নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ শিপন। বিসিবি নারী বিভাগের প্রধান হাবিবুল বাশারও চান ঢাকা লিগে ভালো খেলা অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের টি২০ বিশ্বকাপের ভাবনায় রাখতে। রুমানা আহমেদ, জাহানারা আলম নির্বাচকদের রাডারে থাকলেও বয়সের কারণে কমে গেছে সালমার ফেরার সুযোগ।

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ২০১৪ সাল থেকেই উন্নতি করতে থাকে। ২০১৮ সালে অভিজ্ঞ দল হিসেবে সমন্বিত পারফরম্যান্সে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়। পেস বোলার জাহানারা খেলেন আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে। করোনাকালের নারী আইপিএলে জাহানারার সঙ্গী হয়েছিলেন সালমা খাতুন। টুর্নামেন্টজুড়েই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। রুমানা আহমেদ হয়ে উঠেছিলেন দলের অপরিহার্য একজন ক্রিকেটার। তারাই কিনা জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন দুই বছর আগে। তিনজনের কেউই জ্যোতির দলে নেই। 

গত দুই বছরে বাংলাদেশ নারী দল পরিণত হয়েছে কচিকাঁচার দলে। বয়সভিত্তিকে ভালো করায় ১৬ বছর বয়সী ক্রিকেটারও জাতীয় দলের সদস্য। ফলে অনভিজ্ঞতার প্রভাব পড়তে থাকে পারফরম্যান্সে। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও সিনিয়রশূন্য করে দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে প্রধান নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ শিপন বলেন, ‘সিনিয়রদের ইচ্ছা করে বাদ দেওয়া হয়েছিল, আমার তা মনে হয় না। আগে যারা কাজ করে গেছেন, নিশ্চয়ই তাদের একটা পরিকল্পনা ছিল। তবে আমরা চেষ্টা করব সিনিয়র-জুনিয়র খেলোয়াড় মিলিয়ে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দল বানাতে। কারণ বর্তমান দলে কম বয়সী খেলোয়াড় বেশি। আন্তর্জাতিক সিরিজে অনভিজ্ঞতা প্রভাব ফেলছে। লিগে যারা ভালো খেলছে, তাদের ওপর নজর রাখছি। ভালো দিক হলো সিনিয়ররাও ভালো খেলছে লিগে। যেটা দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াবে।’

২০১৯ সালে নারী জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তিনজন ভারতীয়কে– প্রধান কোচ ছিলেন অঞ্জু জৈন, সহকারী কোচ দেবিকা পাল শেখর ও ট্রেনার কবিতা পান্ডে। মূলত তখন থেকেই জাতীয় দলে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। ২০২০ সালে জাতীয় দলের সাবেক পেসার মঞ্জুরুল ইসলামকে নারী দলের নির্বাচক করা হলে সিনিয়রদের প্রতি বিরাগ হন তিনি। জাহানারা, রুমানা, সালমারা তাঁর সময় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। বিসিবির নারী বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, অঞ্জু জৈনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিতর্কিত হন তিনি। এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরে ২০২৩ সালে নির্বাচকের পদও হারাতে হয় তাঁকে। তাই নতুন করে নারী দল নিয়ে ভাবতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। 

এ ব্যাপারে হাবিবুল বাশার বলেন, ‘বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ভালো করতে ক্রিকেটারদের কিছুটা অভিজ্ঞতার দরকার হয়। আমাদের দলটা বেশি তারুণ্যনির্ভর হয়ে গেছে। এশিয়া কাপ থেকেই একটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করা হবে পারফরমারদের নিয়ে। ভালো দিক হলো লিগে সিনিয়ররা ভালো করছে। এ মুহূর্তে আমি কারও নাম বলতে চাই না। তবে সিনিয়রদের যারাই ভালো করবে, জাতীয় দলের বিবেচনায় তারা অবশ্যই থাকবে।’ 

জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ, অক্টোবরে বাংলাদেশে হবে টি২০ বিশ্বকাপ। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে অভিজ্ঞরা ভালো খেলবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

×