ইতিহাসের হাতছানিতে বৃষ্টির শঙ্কা
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ইতিহাসের পাতায় হাসান মাহমুদ এএফপি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০০:৫৭
দুপুরের পর থেকেই মেঘ জমতে থাকে রাওয়ালপিন্ডির আকাশে। ১৮৫ রানের টার্গেট নিয়ে বাংলাদেশের দুই ওপেনার যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, তখন তো ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে আকাশ। প্রকৃতির এই রূপ কিন্তু জাকির-সাদমানকে দমাতে পারেনি। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের সুবাস পেতে থাকা দুই ওপেনার বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন। তবে চা-বিরতির এক ওভার পর আলোক-স্বল্পতায় খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি শুরু হলে দিনের খেলার সমাপ্তি টানেন আম্পায়াররা। তখন বাংলাদেশের রান ছিল বিনা উইকেটে ৪২। আজ শেষ দিনে জয়ের জন্য আরও ১৪৩ রান প্রয়োজন। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টেও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্নে বিভোর টাইগাররা।
দুই ওপেনারের মধ্যে জাকির ছিলেন প্রায় টি২০ মেজাজে। দুটি করে চার ও ছয়ে ২৩ বলে ৩১ রানে অপরাজিত তিনি। তাঁর সঙ্গী সাদমান আছেন ৯ রান নিয়ে। এই ভালো অবস্থার মাঝেও শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আবহাওয়া। পিন্ডিতে আজও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সকালের সেশনের মাঝামাঝি, অর্থাৎ ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দুপুরের পর আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। তবে বিকেলের দিকে রোদ উঠতে পারে। মিশ্র আবহাওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও রাওয়ালপিন্ডির এ স্টেডিয়ামের ড্রেনেজ সিস্টেম খুব একটা ভালো না। তাই সকালের দিকে জোরে এক দফা বৃষ্টিই দিনের খেলা পণ্ড করে দিতে পারে। আবহাওয়ার এই উপদ্রবের কারণে গতকালই ম্যাচ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল বলে জানিয়েছেন হাসান মাহমুদ। দলের প্রতিনিধি হিসেবে গণমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘যদি আজকে (গতকাল) বৃষ্টি না হতো, তাহলে চিন্তা ছিল আজকের মধ্যেই খেলা শেষ করার।’ বৃষ্টিতে আজ যদি খেলা ড্র হয়, তাহলেও সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। অবশ্য অসাধারণ এক জয়ের এত কাছাকাছি এসেও জিততে না পারাটা হতাশার। আর পাকিস্তানের মতো দলকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ তো বারবার আসে না। তবে শেষ দিনের উইকেটে নাটকীয় অনেক কিছুই হতে পারে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই মাঠে শেষ দিনে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছিল পাকিস্তানের ব্যাটিং।
দেশের বাইরে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ জয় আছে কেবল একটি। ২০০৯ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০তে জিতেছিল টাইগাররা। তবে ক্যারিবীয়দের সে দলটি ছিল দ্বিতীয় সারির। এবার জিততে পারলে সেটা হবে বিদেশের মাটিতে পূর্ণশক্তির কোনো দলের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়। ঐতিহাসিক এই জয়ের মঞ্চ তৈরি করেছেন বাংলাদেশের পেসাররা। যেখানে ৫ উইকেট নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন হাসান মাহমুদ। আগের দিন ব্যাট হাতে লিটনকে চমৎকার সঙ্গ দেওয়ার পর বল হাতে শেষ বিকেলে ১০ বলের স্পেলে পাকিস্তানের ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তরুণ এ পেসার গতকাল পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের লেজটা ছেঁটে দেন। প্রতিপক্ষের শেষ চার উইকেটের তিনটিই যায় ডানহাতি এ পেসারের ঝুলিতে। বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে পাকিস্তানে ৫ উইকেটের স্বাদ নেন তিনি।
তবে ৪ উইকেট পাওয়া নাহিদ রানা রোমাঞ্চ ছড়িয়েছেন বেশি। গতির ঝড় তুলে পাকিস্তানিদের মনে কাঁপন ধরিয়েছেন ২১ বছরের এ তরুণ। হাসান মাহমুদের মতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ তরুণই সকালের সেশনে ৩ উইকেট তুলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছেন। দিনের প্রথম উইকেটটি নিয়েছেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। এ নিয়ে টেস্টে প্রথমবারের মতো কোনো ইনিংসের ১০ উইকেটই শিকার করলেন বাংলাদেশের পেসাররা। তাদের দাপটে ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস।
- বিষয় :
- খেলা-ক্রিকেট