বিপিএল
রাজস্বের ভাগ পাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো
নতুনভাবে শুরু হতে পারে বিপিএল। ছবি: ফাইল
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২:৪৫
রাজস্বের ভাগ চাওয়া বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের পুরোনো দাবি। এ নিয়ে একবার আন্দোলনের মতোও হয়েছিল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ঢাকা ডায়নামাইটস, খুলনা টাইগার্স ও রংপুর রাইডার্স থেকে রাজস্বের ভাগ চেয়ে ২০২০ সালে চিঠি দেওয়া হয়েছিল বিসিবিকে। সুযোগ-সুবিধা না দিলে বিপিএল বয়কটেরও হুমকি দেয় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
এ চার ফ্র্যাঞ্চাইজির তিনটিই দেশের বড় শিল্প গ্রুপ (ঢাকার বেক্সিমকো গ্রুপ, রংপুরের বসুন্ধরা গ্রুপ ও খুলনার জেমকন গ্রুপ)। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিসিবি তড়িঘড়ি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে মিটিং আহ্বান করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন রাজস্বের ভাগ দিতে রাজি হননি। সেই থেকে বেক্সিমকো ও জেমকন বিপিএল থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়।
কুমিল্লা ও রংপুর বিরতি দিয়ে ফিরে এলেও রাজস্ব ভাগের দাবি জানিয়েছে নিয়মিতই। টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল রাজস্ব ভাগাভাগির দাবি জানিয়ে বিসিবিকে চিঠি দিয়েছে কয়েক দিন আগে। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বিপিএল রাজস্বের ভাগ দেবেন।
২০১২ সালে বিপিএল শুরু হয়েছিল রাজস্ব ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে। প্রথম আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি বেশি নেওয়া হলেও রাজস্বের ভাগ পেয়ে খুশি ছিলেন মালিকরা। ইসমাইল হায়দার মল্লিক বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব হওয়ার পর থেকেই ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। চেয়ারম্যান শেখ সোহেলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেন তারা।
২০২২ সালে বরিশাল দলের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন মল্লিক ও শেখ সোহেল। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ন্যূনতম সম্মান দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চেয়ারম্যান নাফিসা কামালের। ২০২৪ সালের বিপিএল শুরুর আগে গভর্নিং কাউন্সিল ও বিসিবির বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছিলেন তিনি। মল্লিক-সোহেল-পাপন বিদায় নেওয়ায় বিসিবি কর্মকর্তারাই উদ্যোগী হয়েছেন বিপিএল ঢেলে সাজাতে। দেশের ক্রিকেটের উন্নতির স্বার্থে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও রাজস্ব ভাগের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
সোমবার সমকালকে তিনি বলেন, ‘আমি ওদের (ফ্র্যাঞ্চাইজি) সুযোগ-সুবিধা দেব। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তারা টাকা খরচ করছে। এখান থেকে তাদেরও কিছু ফেরত পাওয়া উচিত। আমার মাথায় এটা খুব ভালোভাবে আছে। আমি ডিজাইন করছি। ভালো জায়গাগুলোতে হাত দেব। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কিছু চাইতে হবে না। আমি নিজে থেকেই দেব।’
বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদ ২০১৬ সালে বরিশাল বুলসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে। দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ টুর্নামেন্টে সম্পৃক্ত থাকায় সুবিধা-অসুবিধাগুলো জানা আছে তাঁর। ফারুক বলেন, ‘জিনিসগুলো আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সম্মান দেওয়া, কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া গেলে খুশি থাকবে। এবার কিছু জিনিস নিশ্চিত করা হবে।’
টিভি সম্প্রচার, ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, গ্রাউন্ডস রাইটস, টিকিট বিক্রি, স্টেডিয়ামের স্টল ভাড়া থেকে মোটা টাকা আয় আছে বিপিএলের। টিকিট বিক্রিতে সততা দেখালে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ আছে, টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। নকল টিকিট ছাপিয়ে কালোবাজারি করার দায়িত্বে ছিলেন মল্লিকের ঘনিষ্ঠ ওমর রতন। বিসিবি সভাপতি, টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা আনতে চান। বিসিবির একটি সূত্র জানায়, ফারুক আহমেদ প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে মিটিং করে বাকি সিদ্ধান্ত নেবেন।
- বিষয় :
- বিপিএল
- বিসিবি
- ফারুক আহমেদ