আবাহনীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জামালের

জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: ফাইল
সাখাওয়াত হোসেন জয়
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৫:০৬
ভুটানের সঙ্গে দুটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ শেষে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়ানোর অপেক্ষায়। অক্টোবরে ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুম শুরুর কথা। ক্লাব ফুটবলের ব্যস্ততা সবার মধ্যে থাকলেও জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া যে ক্লাবহীন! চুক্তি করার পরও দলবদলের শেষ দিনে অর্থ নিয়ে দর কষাকষিতে চূড়ান্ত তালিকায় ডেনমার্ক প্রবাসী এ ফুটবলারকে রাখেনি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। দলবদলের শেষ মুহূর্তে আবাহনীর এমন কাজকে অপেশাদার বলে আখ্যায়িত করেছেন জামাল। চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে গতকাল সমকালকে জানান এ মিডফিল্ডার।
চুক্তির কাগজ এবং আবাহনী ক্লাব থেকে পাঠানো তাঁর জন্য বিমান টিকিটের কপিও এ প্রতিবেদককে দিয়েছেন জামাল। তাতে দেখা যায়, অনলাইনে চুক্তিটা হয়েছে জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে। ওই মাসেই তাঁর জন্য টিকিটও বুকিং দেয় ক্লাবটি। আবাহনীর সঙ্গে নিজের চুক্তি নিয়ে জামাল বলেন, ‘আমি আবাহনীর সঙ্গে গত জুলাইয়ে অনলাইনে চুক্তি করেছি। সব ঠিক ছিল। এর পর দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা আমাকে বলেছে, ক্লাবের অবস্থা ভালো না তুমি ৩০ শতাংশ কম নাও। আমি রাজি হয়েছি। তারা দু’বার আমাকে বিমানের টিকিট পাঠিয়েছে। যেদিন দলবদলের ফরম বাফুফেতে জমা দিতে হবে, তার ২০ মিনিট আগে আমাকে ক্লাব থেকে ফোন দেওয়া হয়। বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে তারা বলে আরও ৬০ শতাংস বেতন কাটো। তার মানে আমাকে ৯০ পার্সেন্ট বেতন কাটতে হবে। তখন আমি বলেছি, এটা তো হয় না। চুক্তি করার পর আমার সঙ্গে যেটা করেছে আবাহনী, তা ঠিক করেনি। সম্পূর্ণ অপেশাদার আচরণ করেছে আবাহনী।’
শুধু জামালই নন, দলবদলের শেষ দিনে প্রায় সব ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি করেন ক্লাবের কর্তারা। কয়েকজন ফুটবলার তো প্রিমিয়ার লিগে প্রথম লেগে আবাহনীর হয়ে না খেলার চিন্তা করছেন। অন্য ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেলেও আবাহনীর সঙ্গে চুক্তি করায় সেই ক্লাবকে না করে দিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন জামাল। জাতীয় দলের অধিনায়কের ক্লাব ফুটবলে দল না পাওয়াটা দেশের ফুটবলের জন্য বিরল।
তাই আবাহনীর বিরুদ্ধে বাফুফেতে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি, ‘ওরা (আবাহনী) মনে করছে আমার অন্য কোনো চয়েজ নাই। আর এখন তো সময় নাই, তাই বাধ্য হয়েই আমাদের কথাতে রাজি হবে। কিন্তু আমি রাজি হইনি। আমি সই করেছি কিনা তাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি ইতোমধ্যে বাফুফেতে অভিযোগ দিয়েছি আবাহনীর বিরুদ্ধে। সাধারণ সম্পাদক ইমরানকে (ইমরান হোসেন তুষার) জানিয়েছি। কিছুদিন আগে তাঁকে আমি সব ডকুমেন্টস পাঠিয়েছি। যদি চুক্তি না করি, তাহলে কেউ তো বিমানের টিকিট পাঠাত না। তারা দেখেছে, দুই-তিনটা টিম দল করতেছে না, সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে।’
সামনে জাতীয় দলের খেলাও নেই। তাই জামাল চাচ্ছেন ধারে অন্য কোনো ক্লাবে খেলতে, ‘আমি ইমরানকে বলেছি, যেহেতু আবাহনীতে সাইন করেছি, তারা আমাকে বাদ দিয়েছে। আমি চাই ধারে অন্য কোনো ক্লাবে খেলতে। বিষয়টি এমনভাবে করা যায় কিনা যে আবাহনী আমাকে লোনে অন্য ক্লাবে খেলতে দিয়েছে। এখন তো আবাহনী দুই নাম্বারি করছে আমার সঙ্গে। ইমরান আমাকে বলেছেন, বিষয়টি দেখতেছি।’
চুক্তিভঙ্গের সঙ্গে আবাহনীর সহকারী কোচ জাকারিয়া বাবুর বিরদ্ধেও অভিযোগ জামালের, ‘জাকারিয়া বাবু ক্লাবের মধ্যে সবকিছু করতেছেন। এই ক্লাবটাকে তিনি শেষ করে দিচ্ছেন। সবাইকে বুদ্ধি তিনি দেন। যারা আছেন বেক্সিমকোর লোক, তারা তো ফুটবল নিয়ে কিছু জানেন না। সব বুদ্ধি দেয় জাকারিয়া বাবু ভাই।’
- বিষয় :
- জামাল ভূঁইয়া
- আবাহনী