বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট
জ্যামাইকায় পেস না স্পিন
কোচ সালাউদ্দিনের সঙ্গে মুমিনুল হক।
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩:২৭ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩:২৭
ক্যারিবীয় দ্বীপে গিয়ে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি পোস্ট করার লোভ কেই বা উপেক্ষা করতে পারে। অ্যান্টিগার সমুদ্রতটে তাই ক্রিকেটার পোস্ট করা অনেক ছবিই ফেসবুকে বহু লাইক-কমেন্টস কুড়িয়েছে। কিন্তু সেখানে প্রথম টেস্ট ২০১ রানে হারার পর সেলিব্রিটি ক্রিকেটারদের অফিসিয়াল পেজ স্বাভাবিক কারণেই এখন নীরব।
জ্যামাইকায় গিয়ে সেখানকার সৌন্দর্য নয় বরং তাদের চোখ এখন আটকে সাবিনা পার্কের বাইশ গজে। যেখানে এরই মধ্যে ক্যারিবীয় দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পেস আক্রমণ দিয়েই তারা বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করবে।
মেহেদী হাসান মিরাজদের পক্ষ থেকে অবশ্য এর পাল্টা কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে রেকর্ড বলছে এ মাঠে বছর ছয় আগে একটি ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৮ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ। যেখানে সাকিব আল হাসান একাই নিয়েছিলেন ৬ উইকেট, তাঁর সঙ্গে মিরাজ-তাইজুল মিলে শিকার করেছিলেন ৩ উইকেট। আজ শুরু হওয়া দ্বিতীয় ও সিরিজের শেষ টেস্টে বাংলাদেশ স্পিন আক্রমণ সাজাবে নাকি তাসকিন, হাসান, শরিফুলের সঙ্গে নাহিদ রানাকে নিয়ে গতির ওপর ভরসা বাড়াবে? তবে টিম সূত্রের খবর বোলিং নয় আপাতত ম্যানেজমেন্টের কপালে গাঢ় ভাঁজ দলের ব্যাটিং নিয়ে।
পাকিস্তানে সেই ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর ব্যাট হাতে একেবারেই ছন্দহীন ব্যাটাররা। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আট ইনিংসের পাঁচটিতেই দলের স্কোর দেড়শর আশপাশে গিয়ে থেমেছে। এমনকি অ্যান্টিগাতেও নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫২ রানের ওপরে যেতে পারেনি। সব মিলিয়ে এ জায়গাটিতেই দলের অন্যতম বড় সমস্যা চিহ্নিত করেছেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
সেদিন অ্যান্টিগা টেস্ট হারার পর অনেকটা অসহায় লেগেছে মিরাজকে। ‘আমরা এ ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করিনি। কিছু ভুল করেছি, কিন্তু সেটা হতেই পারে।’ মিরাজ আশ্বাস দিয়েছেন জ্যামাইকাতে সেই ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবেন। এমনিতেই একটা পরিবর্তিত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দল।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বদলে কোচের দায়িত্বে ফিল সিমন্স। তবে দলে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে তাঁর সহকারী হিসেবে আনা হয়েছে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে। মাহমুদুল, জাকির, মুমিনুল, শাহাদাত, লিটনদের মতো ক্রিকেটারদের সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেটে কাজ করার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে সালাউদ্দিনের।
তবে এ দলের লিটন, মিরাজকে বাইরে রাখলে অন্তত আটজনের এটাই প্রথম ক্যারিবীয় সফর। ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ, আলঝারি যোসেফ, জেইডেন সিলসের বল খেলতে অস্বস্তি স্পষ্ট হয়েছে জয়, জাকিরদের মতো টপ অর্ডার ব্যাটারদের। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ১৮ উইকেট শিকার করেছিলেন ক্যারিবীয় পেসাররা। তাই জ্যামাইকাতেও সেই পেস আতঙ্ক থাকছেই।
‘কেমার রোচ আর আলজারি জোসেফ পেস আক্রমণে ভালো নেতৃত্ব দিচ্ছে আমাদের। শামার জোসেফের মতো নতুন মুখও রয়েছে আমাদের স্কোয়াডে। সিলশ বেশ কিছুদিন ধরেই খেলছে, তবে সে এখনও শিখছে। সব মিলিয়ে আমাদের পেসাররা নিজেদের ভালোভাবেই জানান দিচ্ছে। তারা যে ভীতি তৈরি করছে, ব্যাটারদের চোখেমুখেই তা ফুটে উঠেছে। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততে চাই আমরা।’ ক্যারিবীয় দলের সহ-অধিনায়ক জশুয়া ডি সিলভার বেশ আত্মবিশ্বাসী তাদের এ দল নিয়ে।
তিন বছর পর এ মাঠে টেস্ট খেলতে নামছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সর্বশেষ ২০২১ সালের আগস্টে ক্যারিবীয়দের ১৫০ ও ২১৯ রানে অলআউট করে ম্যাচ জিতেছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। তাই এ টেস্টে বাংলাদেশ স্কোয়াডের সবচেয়ে গতিময় পেসার নাহিদ রানাকে খেলানোর সম্ভাবনা বেড়েছে। যদি সত্যিকার অর্থেই এ টেস্টে গতির ঝড় ওঠে, সেখানে কিন্তু বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না।