ঢাকা রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

আট চেয়ে সাতেই গর্বিত তাসকিন

আট চেয়ে সাতেই গর্বিত তাসকিন

তাসকিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১২:২০

সারাবেলা অপেক্ষার পরও সূর্যের উঁকিঝুঁকি দেখা যায়নি, উত্তরের শিরশিরে হাওয়ায় তখন গ্যালারিতে জবুথবু অবস্থা। শীতের এমন হাওয়াতেই কিনা লাগল নাচন তাসকিনের! বছরের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই আগুন ঝরালেন মিরপুরে। তাঁর সেই বোলিং উত্তাপ দুর্বার রাজশাহী উপভোগ করলেও প্রতিপক্ষ ঢাকা ক্যাপিট্যালসের ৭ উইকেট কিন্তু পুড়ে ছাই হলো! মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিয়ে তাসকিন শুধু বিপিএল ইতিহাসেরই সেরা বোলিং প্রদর্শন করলেন না, টি২০ ফরম্যাটের বিশ্ব ইতিহাসে সেরা বোলিংয়ের তালিকায় তৃতীয় স্থানে নিজের নামটি লেখালেন। তাসকিনের এ রেকর্ড বোলিংয়ের পরও ১৭৪ রানের পুঁজি গড়েছিল ঢাকা। কিন্তু ব্যাট হাতে এনামুল হক বিজয় ৭৩ রানে অপরাজিত থেকে সেই পুঁজিকে সহজেই টপকে যায় দুর্বার রাজশাহী। ঢাকাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দেয় তারা। নিজের এমন দিনে স্বভাবতই খুশি তাসকিন, সঙ্গে গর্বিতও। ‘আসলে ফাইপার তো যে কোনো ফরম্যাটেই বিশেষ কিছু। ৫টা উইকেট পেতে ভাগ্যও লাগে। আলহামদু্ল্লিলাহ এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। যেহেতু আমি বাংলাদেশের ছেলে, তাই বিপিএলের ইতিহাসে আমার নামটা লেখা থাকবে খেলা ছাড়ার পরও। এটা আমার জন্য গর্বের একটু মুহূর্ত। সত্যি বলতে কি, আমার মনে হয় এখন দেওয়ার সময় শুরু হয়েছে। এত দিন বোর্ড পাশে থেকেছে, অভিজ্ঞতা হয়েছে, পরিস্থিতি ভালো বুঝতে পারি। আমার দায়িত্ব এখন দলকে দেওয়া, যে দলেই খেলি বাংলাদেশ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি।’ ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সামনে ধরা পড়েন চেনা হাসির সফল এক তাসকিন।

আসলে এদিন ম্যাচ শুরুর আগে ৮ উইকেট পাওয়ার কথাও উঠেছিল দুর্বার রাজশাহীর ড্রেসিংরুমে। মজার সেই ঘটনাটা তাসকিন জানান মিডিয়ার সামনে। ‘আজকে একটা মজার ব্যাপার হয়েছিল। আমাদের দলের যে মেসিয়ার, সেই আনোয়ার ভাই বলছিল যে ভাইয়া আজ তুমি চার উইকেট পাবা। আমি তাকে বলি, চাচ্ছিস যেহেতু আল্লাহর কাছে বেশিই চা– ৮ উইকেটও তো হতে পারে। অবশেষে ৭ পেয়েছি; ভালো লাগছে যে পরিকল্পনাগুলো কাজে লাগাতে পেরেছি এবং জিতেছি।’ আসলে এদিন ৮ উইকেট পাওয়ারও সম্ভাবনা ছিল তাসকিনের। ঢাকার ইনিংসের শেষ বলে মুস্তাফিজকে আউট করলেই তা হয়ে যেত। কিন্তু মুস্তাফিজ সেটা ঠেকিয়ে দেন। আসলে এদিন ৭ উইকেটের ৫টিই তাসকিন নিয়েছিলেন নিজের শেষ দুই ওভারে। ইনিংসের ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ঢাকার সর্বোচ্চ স্কোরার শাহাদাত হোসেনকে ফেরানোর পর ওভারের পঞ্চম বলে লঙ্কান ব্যাটার চতুরাঙ্গা ডি সিলভাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে নেন। শেষ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে আলাউদ্দিন বাবু ও মুকিদুল ইসলামের উইকেট নেন। হ্যাটট্রিক করতে দেননি নাজমুল ইসলাম। ওই ওভারের পঞ্চম বলেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ক্রিকেটার শুভম রঞ্জনকে আউট করেন। এর আগে প্রথম স্পেলে লিটন আর তানজিদকে ফেরান তিনি। সব মিলিয়ে দিনটি ছিল তাসকিন আহমেদের। গত বছর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৬৩ উইকেট নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরও শুরু করলেন একই ছন্দে। ‘আসলে উইকেটে একটু ভাগ্যেরও দরকার হয়। লোভে যাই নাই, বেশি লোভে গেলে দেখা গেল হাফ ভলি হতে পারত। প্রতিটি বল আমি উপভোগ করেছি।’ এদিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সূর্য হয়েই যেন আলো ছড়িয়েছেন তাসকিন।

আরও পড়ুন

×