ঢাকা শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫

তামিমের হাতে বদলেছে ব্যাটিং

তামিমের হাতে বদলেছে ব্যাটিং

ছবি- সংগৃহীত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ | ১০:২৪

সুখ্যাতি তামিম ইকবালকে সম্মানিত করেছে। ক্রিকেটবিশ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন গ্রহণযোগ্য একজন মানুষ হিসেবে। তাই তো তামিমের আহ্বানে বিপিএলে খেলতে এসেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার কেশব মহারাজ। শাহিন শাহ আফ্রিদি জাতীয় দল থেকে ছুটি নিয়ে খেলে গেছেন বিপিএলে। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে খুব সম্মান করেন ক্যারিবীয় ক্রিকেটার কাইল মায়ার্সরাও। বিপিএলে মানসম্পন্ন বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়ার জন্য বিসিবি বহুবার তামিমের সম্মুখীন হয়েছে। বাঁহাতি এ ব্যাটার দেশের কথা ভেবে উদারভাবে সব কিছু করে দিয়েছেন। 

বিশ্বের কাছে একজন পরিচ্ছন্ন ব্যাটার হিসেবে পরিচিত তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন দু’দিন আগে। কিংবদন্তি এ ক্রিকেটারের বিদায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিবাদন জানিয়েছেন জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার। সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের কাছ থেকে পেলেন দেশসেরার সম্মান। আকরাম খানের কাছে তিনি দেশের ক্রিকেটকে বদলে দেওয়ার নায়ক।

ছোট্ট তামিমের আত্মপ্রকাশ ২০০৫ সালে লিস্ট-এ ক্রিকেট দিয়ে। ২০০৬ সালে আকরাম খানের নেতৃত্বে ওল্ডডিওএইচএসে খেলার সময় চোখেমুখে ছিল কৈশোরের ছাপ লেগে থাকলেও ব্যাটিংটা করতেন বড়দের মতোই। সে বছরই লিগের পারফরম্যান্স দিয়ে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন। 

বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদ সাবেক প্রধান নির্বাচক হিসেবে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তামিম ইকবালকে জাতীয় দলে নিয়ে সাহস দেখিয়েছিলেন। ফারুকের সেই সাহসী ভূমিকায় দেশ পেয়েছিল ভবিষ্যতের তারকা ক্রিকেটার। ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে হারানো সেই ম্যাচ কোনো দিনও ভোলার নয়। তামিমের প্রথম অধিনায়ক হাবিবুল বাশার কোনো কিছুই ভোলেননি, ‘তামিমের ব্যাটিং মিস করব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। মিস করছিলামও। আমি বলব, সে আমাদের সেরা ব্যাটার। আমার সময় থেকে যতজনকে দেখেছি, সেই সেরা। এখনও যে ব্যাটিং করছে, তার ধারেকাছে কেউ নেই। তামিম ইকবালকে ধন্যবাদ দেশের জন্য অবদান রাখায়। একটি বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার তার। সে ছিল টিমম্যান। দলের প্রয়োজনে এক হাতেও ব্যাটিং করেছে। একজন একাগ্র ব্যাটার। সে পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিংয়ের স্টাইলটাই পাল্টে দিয়েছিল। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের পরিবর্তনটা তামিমের হাত দিয়েই হয়েছে বলব। ২০০৭ বিশ্বকাপ আমরা দেখেছি আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটা তার হাত দিয়েই শুরু হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কী করেছে, তা সবাই জানি। অসাধারণ ক্যারিয়ার তার। সে এমন একজন, যে প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে খেলেছে। চ্যালেঞ্জ যখন এসেছে, কখনও পিছিয়ে যায়নি। যেটা তামিম ইকবালের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব।’

চট্টগ্রামের খান পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্মের তৃতীয় টেস্ট ক্রিকেটার তামিম। আকরাম খানের পর নাফিস ইকবাল খেলেছেন টেস্ট। বড় ভাই নাফিস অকালে ঝরে গেলেও তামিম নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। নিজের ভ্রাতুষ্পুত্রকে নিয়ে বলতে গিয়ে আবেগী হলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম, ‘সত্যি কথা বলতে, ওকে প্রথম যখন দেখেছি অবাক হয়েছি। ওর হাতেখড়ির সময়ে জয়াসুরিয়ার যুগ চলছিল। ওই সময়ে তামিমের বাবা একটি ম্যাচ আয়োজন করেছিলেন চট্টগ্রামে। আমি ওর সঙ্গে খেলছিলাম। ওই সময় তাকে মারতে দেখে বুঝে গিয়েছিলাম একজন বড় ক্রিকেটার হবে। নাফিস ইকবালও ভালো খেলোয়াড় ছিল। তবে তামিম তার ক্যারিয়ার অনেক ওপরে নিয়ে গেছে।’ 

আকরামের মতে, ‘তামিম জাতীয় দলে আসার আগে আমাদের ব্যাটাররা ডমিনেন্ট করতে পারত না। সেই প্রথম বোলারদের ওর ডমিনেন্ট করে খেলছে। জহির খানকে ছয় মেরেছিল। তামিমের অনেক ইনিংস আমি দেখেছি। ও যখন খেলত, আমরা মনোযোগ দিয়ে দেখতাম ব্যাটিংটা। ও চাইলে আরও দুই বছর খেলতে পারত। তবে গত চার বছরে ওর ক্যারিয়ার নষ্ট করা হয়েছে। আমি এতদিন কিছু না বললেও খুব কষ্ট পেয়েছি। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর তাকে সেভাবে খেলতে দেওয়া হয়নি। ও নিরবচ্ছিন্ন খেলতে পারলে দেশ লাভবান হতো।’

আরও পড়ুন

×