ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

জুলাইয়ে খুলছে ক্রীড়াঙ্গনের লকডাউন

জুলাইয়ে খুলছে ক্রীড়াঙ্গনের লকডাউন

জাহিদ আহসান রাসেল। ছবি: ফাইল

--

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ | ০১:১০



সেই মার্চ থেকে বন্ধ ঘরোয়া ক্রীড়াঙ্গন। বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও চলছে ইউরোপিয়ান ফুটবল। বাংলাদেশেও শিথিল করা হয়েছে লকডাউন। খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস। সচল হয়েছে ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোও। তবে এখনও মাঠে গড়ায়নি ঘরোয়া কোনো খেলাধুলা। তাই বলে বসে থাকতে চাইছে না যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। জুলাইয়ের দিকে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট চালু করার আশা যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির। অসহায় ক্রীড়াবিদদের জন্য আরও তিন কোটি টাকা বরাদ্দসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়...

সমকাল : ক'দিন আগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা থেকে করোনাযোদ্ধার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। করোনাকালীন আপনি অনেক পরিশ্রম করছেন। কার অনুপ্রেরণায় এসব কর্মকাণ্ড করতে উৎসাহ জুগিয়েছে?

জাহিদ আহসান রাসেল : প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় আমি কাজ করছি। উনি শুরু থেকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি সেভাবে কাজ করছি। আমি দেখেছি করোনার সময়ে মানুষের কষ্ট। সেই কষ্টগুলো আমাকে ব্যথিত করেছিল। তাই নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারিনি। আমার সাধ্যমতো আমি করোনায় দুস্থ মানুষদের সাহায্য করেছি। তাদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়েছি। এমনকি রাতের আঁধারেও আমি অসহায় মানুষের বাসায় খাবার পাঠিয়েছি। আর আমার নিজ নির্বাচনী এলাকায় দুটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। একটি করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য, অন্যটি যাতে কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় সেজন্য। আমি বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তারদের সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছি। সাংবাদিকদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষার সামগ্রী দিয়েছি। এসব যা কিছুই করেছি, তা প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই করেছি।

সমকাল : কখনও কি মনে হয়েছে করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন?

জাহিদ আহসান রাসেল : যখন মানুষের জন্য কাজ করতে নেমেছি, তখন থেকেই মনে হয়েছে যে হয়তো করোনায় আক্রান্ত হবো। যদিও আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করেছি। তারপরও মনে হয়েছে করোনায় আক্রান্ত হতে পারি। আপনারা জানেন যে আমার গানম্যানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আল্লাহ সুস্থ রেখেছেন।

সমকাল : এই পুরস্কারটি কাকে উৎসর্গ করতে চান?

জাহিদ আহসান রাসেল : করোনায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে যারা কাজ করছেন ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিকসহ আরও অনেকে, তাদের আমি আমার এই পুরস্কারটি উৎসর্গ করতে চাই।

সমকাল : যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্রীড়াবিদদের জন্য অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও কি তা বজায় থাকবে?

জাহিদ আহসান রাসেল : আপনারা জানেন যে, আমরা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে এক হাজার ক্রীড়াবিদকে ১০ হাজার টাকা করে মোট এক কোটি টাকা দিয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে ১০০ ক্রীড়াবিদকে সাহায্য করেছি। অসহায় ক্রীড়াবিদদের জন্য নতুন করে আরও তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এবার দেশের আট বিভাগ ও ৬৪ জেলা থেকে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ক্রীড়াবিদদের তালিকা করে তাদের অর্থ দেওয়া হবে।

সমকাল : লকডাউন তো শিথিল করা হয়েছে। দেশের ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলো কবে নাগাদ শুরু হতে পারে?

জাহিদ আহসান রাসেল : বিশ্বের অনেক দেশেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। আস্তে আস্তে খেলাধুলাও শুরু করছে অনেক দেশ। ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে পুনরায় ফুটবল চালু হয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বরে আমাদের বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক এ মহামারিটা সহজেই যে শেষ হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। মনে হচ্ছে এটাকে নিয়েই আমাদের চলতে হবে। তাই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন এবং ক্রীড়া সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটা মিটিং করব। সেখানে সবকিছু পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব কবে নাগাদ আবারও খেলা শুরু করা যেতে পারে। আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, আগে সবাইকে সুস্থ থাকতে হবে। কারণ, ক্রীড়াবিদরা বাঁচলে খেলতে পারবে। এখন আমাদের চাওয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলাগুলো পুনরায় শুরু করা।

সমকাল : তাহলে কি জুলাইয়ে খুলছে ক্রীড়াঙ্গনের লকডাউন?

জাহিদ আহসান রাসেল : এটা আমরা মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত নিতে পারব। এমন অনেক খেলা আছে যেমন আরচারি, শুটিং, ব্যাডমিন্টন, দাবা, টেবিল টেনিস জুলাই নাগাদ শুরু করা যেতে পারে। এসব খেলার মধ্যে তো ঝুঁকি কম থাকে। আর করোনার যে অবস্থা, তাতে খুব সহজেই এটা থেকে মুক্তি মিলবে বলে মনে হয় না। আমি মনে করি, জুলাইয়ে ইনডোর গেমসের মতো অনেকগুলো খেলা চালু করা যেতে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে আমাদের মিটিংয়ের ওপর।

সমকাল : এ বছর কি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমস হওয়ার সম্ভাবনা আছে?

জাহিদ আহসান রাসেল : বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমস দেশের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসর। এখানে প্রচুর ক্রীড়াবিদের সমাগম ঘটবে। করোনাভাইরাসের কারণে এপ্রিলে সেটা হয়নি। আমাদের টার্গেট হচ্ছে নভেম্বরের মধ্যে। যদি কভিড-১৯-এর অবস্থা খারাপ হয়, তাহলে আরও কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। হয়তো এ বছর আর নাও হতে পারে বাংলাদেশ গেমস। তবে আমাদের টার্গেট হলো জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে করা। কারণ, আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত মুজিব জন্মশতবার্ষিকী থাকবে। এই সময়ের মধ্যে গেমসটি আয়োজন করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।

আরও পড়ুন

×