ঢাকা শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

মাঠে ফেরাতেই আনন্দ

মাঠে ফেরাতেই আনন্দ

আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট বা সিরিজ নয়, নয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টও; তবু দেশের মাটিতে ক্রিকেট ফেরানোর 'স্মারক' প্রেসিডেন্টস কাপকে ঘিরে আয়োজনের সর্বোচ্চটাই করছে বিসিবি। এই যেমন গতকাল আড়ম্বরের সঙ্গে ট্রফি উন্মোচন করলেন তিন অধিনায়ক তামিম, নাজমুল ও মাহমুদুল্লাহ-বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ | ০০:১৯

প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট হলেও গ্রেডে যে কোনো ঘরোয়া টুর্নামেন্টের চেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ করা হচ্ছে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। তিন দলের এ টুর্নামেন্টের অর্থ পুরস্কারই রাখা হয়েছে ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ১১টি বিভাগে দেওয়া হচ্ছে ব্যক্তিগত পুরস্কার। যেটা টুর্নামেন্টের জৌলুস বাড়িয়েছে ক্রিকেটারদের কাছেও। বিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেও ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে এত পুরস্কার থাকে না।

বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলছেন, টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে এই অর্থ পুরস্কার রাখা। শুধু ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করতেই নয়, টুর্নামেন্টের প্রচারেও নেমেছে বিসিবি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আটটি ক্যামেরা বসিয়ে স্ট্রিমিং করা হবে ম্যাচ। ফেসবুকে সরাসরি দেখা যাবে খেলা। চেষ্টা করা হচ্ছে, ফাইনাল ম্যাচটি টিভিতে দেখানোর। প্রস্তুতিমূলক ওয়ানডে টুর্নামেন্ট এত জাঁকজমকপূর্ণ করার অর্থ হতে পারে, 'নিউ নরমাল' বায়োসিকিউর বাবলে টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ক্রিকেটবিশ্বকে জানান দিতে চাচ্ছে বিসিবি।

বিসিবি গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১৫ লাখ টাকা। রানার্সআপ দলের জন্য রাখা হচ্ছে এর অর্ধেক টাকা। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় দুই লাখ, সেরা ব্যাটসম্যান, বোলার ও ফিল্ডারকে দেওয়া হবে এক লাখ টাকা করে। ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় পাবেন এক লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রতি ম্যাচসেরার পুরস্কার ৫০ হাজার, সেরা ব্যাটসম্যান, বোলার ও ফিল্ডার পাবেন ২৫ হাজার টাকা করে। টুর্নামেন্টের পরিসর ছোট্ট হলেও তাৎপর্যে বিশাল। তিন দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও সাপোর্ট স্টাফ মিলে হোটেলে থাকবেন ৬৪ জন। যেখানে ক্রিকেটার ৪৫ জন।

ভেন্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সদস্য মিলে ১২০ জনের কভিড টেস্ট করা হয়েছে দু'দিন আগে। প্রেস বক্সও খোলা থাকবে এ টুর্নামেন্টে। এদিক থেকেও পরীক্ষা হয়ে যাবে বিসিবির। বিশ্বের কাছে বড় বার্তা যেতে পারে এর মধ্য দিয়ে। তাই আয়োজনের দিক দিয়ে সফল হওয়ার একটি চ্যালেঞ্জ থাকবে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর জন্যও এটি একটি পরীক্ষা।

তিনি বলেন, 'আইসিসি, ইসিবির গাইডলাইনের সঙ্গে সমন্বয় করে বিসিবির জন্য একটি বায়োসিকিউর বাবল করা হয়েছে। ধাপে ধাপে সেটা প্রয়োগ করা হচ্ছে। প্রথমে জাতীয় দলের ক্যাম্প হয়েছে। দুই দিনের ম্যাচ খেলার পরও তিন দলের টুর্নামেন্ট হচ্ছে। আমরা এখন একটি ভেন্যু নিয়ে কাজ করছি। সামনে হয়তো একাধিক ভেন্যুতে কাজ করতে হতে পারে।'

প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে খেলা হয়নি প্রায় সাত মাস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ শেষে ১৫ মার্চ থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছিল বিসিবি। প্রথম রাউন্ড শেষে করোনার কারণে বন্ধ করে দিতে হয় খেলা। সেই থেকে দেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক খেলা বন্ধ। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সম্প্রতি লাল বলে দুটি দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। বায়োসিকিউর বাবলে সেখানে সাফল্য পাওয়ায় তিন দলের মধ্যে ওয়ানডে টুর্নামেন্ট হচ্ছে। এই টুর্নামেন্ট সফল হলে নভেম্বরে হতে পারে পাঁচ দলের টি২০ টুর্নামেন্ট। দেশের করোনা পরিস্থিতি খারাপ না হলে ধারাবাহিকতা রেখে শুরু করা হতে পারে ঘরোয়া লিগ।

পরীক্ষামূলক এই টুর্নামেন্টে খেলতে মুখিয়ে আছেন তামিম, মাহমুদুল্লাহরা। গতকাল তারই মহড়া দিয়েছেন তিন অধিনায়ক হোটেল সোনারগাঁওয়ে ট্রফি উন্মোচন করে। আজ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন হবে ছোট্ট পরিসরে। মাঠে খেলা ফিরলেও দর্শক ফিরছে না। সাধারণ গ্যালারি ফাঁকা রেখেই চলবে দিবারাত্রির খেলা। তবে ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা চাইলে মাঠে এসে খেলা দেখার সুযোগ রেখেছে বিসিবি। সেই সুযোগ তাদের পরিবাররা নেবেন কিনা নিশ্চিত নয়, তবে করোনাকালে প্রায় সাত মাস পর ম্যাচ খেলতে পারার আনন্দ এখন ক্রিকেটারদের চোখেমুখে।

আরও পড়ুন

×