খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও বাড়ছে বিও অ্যাকাউন্ট

শেয়ার বাজার
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৩ | ২২:৪৩
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বিরোধপূর্ণ অবস্থানকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে অস্থিরতা বেড়েছে। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর নতুন করে শুরু হয়েছে সহিংসতা। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়। সার্বিকভাবে শেয়ারবাজারের অবস্থাও খারাপ। তবে এর মধ্যে সর্বশেষ তিন মাসে বেড়েছে ১৯ হাজারের বেশি বেনিফিশিয়ারি
ওনার্স বা বিও অ্যাকাউন্ট। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি প্রতিষ্ঠান সিডিবিএলের হালনাগাদ তথ্যে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার এমন চিত্র মিলেছে।
সিডিবিএল সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১ আগস্ট থেকে গড়ে প্রতিদিন বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ২৮৫টি। শুধু গত ২২ আগস্ট এক দিনে ৩৯২টি বিও অ্যাকাউন্ট কমে। ওই কমা বিবেচনায় নিয়েও গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৮ কার্যদিবসে মোট ১৯ হাজার ৩৬৯টি বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছে। গত ২৮ অক্টোবরের পর ১০ কার্যদিবসে দুই হাজার অ্যাকাউন্ট বেড়েছে।
এর আগে নতুন করে নবায়ন না করায় গত জুন ও জুলাই মাস মিলে ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৬২টি বিও অ্যাকাউন্ট কমে। এতে গত ৩১ জুলাই শেষে বিও অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ২৫টিতে নামে। গত বৃহস্পতিবার শেষে এ সংখ্যা ফের বেড়ে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৯৪-এ উন্নীত হয়েছে।
জুন-জুলাই মাসে নবায়ন না করার কারণে বিও অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়া এবং আগস্ট থেকে নতুন করে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতি বছর এমন দেখা যায়। গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর সময়কালে ১৯ হাজার ৪৭৫টি বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছিল।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার এক বছরের বেশি সময় ধরে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকায় সব বিনিয়োগকারীর মধ্যে অস্বস্তি আছে। গড়ে প্রত্যেকের ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ আটকে গেছে। এর পরিমাণ লাখ কোটি টাকার কম নয়। এর মধ্যেও বিও অ্যাকাউন্ট বাড়ছে।
এর কারণ কী হতে পারে জানতে চাইলে সিটি ব্রোকারেজের সিইও মিসবাহ উদ্দিন আফফান সমকালকে বলেন, এখন প্রতিদিন তাদের হাউসে ১৫ থেকে ২০টি নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খুলছেন বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে জুন-জুলাই মাসে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছিলেন এমন পুরোনো বিনিয়োগকারী যেমন আছেন, তেমনি নতুন বিনিয়োগকারীও আসছেন। নতুন বিনিয়োগকারীরা ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ নিয়ে আসছেন।
সার্বিক পরিস্থিতি যখন নেতিবাচক তখন নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলার কারণ কী হতে পারে– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রথমত যখন কোনো আইপিও আসে তখন কিছু না কিছু নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এ ছাড়া এখন অনেক ব্রোকারেজ হাউসে অনলাইনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। এ কারণেও বিও অ্যাকাউন্ট খোলা বাড়তে পারে।
ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংকট থাকলেও সব শেয়ারের দরে ফ্লোর প্রাইস থাকার কারণে অনেকেই মনে করতে পারেন, শেয়ারবাজার পরিস্থিতি বর্তমানের তুলনায় খারাপ হওয়ার শঙ্কা নেই। এমন ভাবনা নতুন বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করে থাকতে পারে।
সিডিবিএল সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার শেষে সক্রিয় ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৯৪ বিও অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৪টিতে শেয়ার ছিল। ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩১টিতে কোনো শেয়ার ছিল না। ৬৭ হাজার ৩১৯টি অ্যাকাউন্টে কোনো শেয়ার কেনাবেচা হয়নি।