ডিএসই সূচকে এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

শেয়ার বাজার
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৩ | ২১:৩৬
অধিকাংশ শেয়ারের দরপতনের সঙ্গে মূল্য সূচকেও পতন হয়েছে গতকাল রোববার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৬২৫৭ পয়েন্টে নেমেছে। সূচকের এ পতন গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৮ অক্টোবর এক দিনে ২৪ পয়েন্ট হারায় এ সূচকটি।
পয়েন্ট বিবেচনায় সূচকের এ পতন বড় না হলেও বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি বড় পতন। কারণ সূচকভুক্ত সিংহভাগ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। এগুলোর দরপতনের সুযোগ না থাকায় সূচকে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সুযোগ ছিল না।
গতকালের সূচকের পতন বিশ্নেষণে দেখা গেছে, প্রাইম ব্যাংক, সি পার্ল হোটেল, এমারেল্ড অয়েল, এডিএন টেলিকম, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারসহ বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারের দরপতন বড় ভূমিকা রেখেছে। এগুলোর কারণে সম্মিলিতভাবে সূচক হারায় ৭ পয়েন্ট। একক খাত হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সিংহভাগ শেয়ারের দরপতনে সূচক হারিয়েছে ৩ পয়েন্ট। তবে সার্বিক হিসাবে অধিকাংশ শেয়ারের দর কমাই সূচককে বেশি নেতিবাচক করেছে। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টা শেষে সূচকে যে নিম্নমুখী ধারা ছিল, লেনদেন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তা থামেনি।
জানতে চাইলে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সিইও সাফফাত রেজা সমকালকে বলেন, কেউ কেউ মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব থাকতে পারে। আবার কেউ কেউ গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি ইস্যুতে অস্থিরতার কথাও বলছেন। এর বাইরে আরেকটি কারণ সামনে আইপিও আছে। সামগ্রিকভাবে এর প্রভাব বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৯২ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩০৫টির কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে। ক্রেতার অভাবে ৮৭টির কোনো লেনদেনই হয়নি। সব মিলিয়ে ৪১৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় ৫০ কোটি টাকা কম।
সার্বিক হিসাবে ৪৬ শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে ১১০টির এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ১৪৯টির দর। সার্বিক নেতিবাচক ধারার মধ্যেও ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ার সংখ্যা তিনটি কমে ১৩৮টিতে নেমেছে। গতকাল তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা অয়েল, স্টাইল ক্রাফটের শেয়ার এবং এনসিসি ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড দর হারিয়ে ফ্লোর প্রাইসে নেমেছে। বিপরীতে রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, ঢাকা ডাইং, ইভিন্স টেক্সটাইল, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, প্যাসিফিক ডেনিম, জাহীন স্পিনিং এবং উসমানিয়া গ্লাসের শেয়ারদর কিছুটা বেড়ে ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে। তবে এর মধ্যে প্যাসিফিক ডেনিমের দর ৯ শতাংশ বেড়ে ১০ টাকা ৮০ পয়সায় এবং ইভিন্স টেক্সটাইলের দর ৩ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৭০ পয়সায় উঠেছে। বাকিগুলোর দর বৃদ্ধি আধা শতাংশ থেকে দেড় শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রায় ১০ শতাংশ দর হারিয়ে দরপতনের শীর্ষে ছিল এডিএন টেলিকম। প্রায় ৯ শতাংশ হারিয়ে এমারেল্ড অয়েল এবং অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ছিল এর পরের অবস্থানে। তবে এর বিপরীতে ১০ কোম্পানির শেয়ার দর ৬ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, যার সিংহভাগ রুগ্ণ, লোকসানি বা বন্ধ কোম্পানি। এর মধ্যে সাতটিরই দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি। বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার হলো– শ্যামপুর সুগার, জিলবাংলা, সুহৃদ, খান ব্রাদার্স পিপি, বিডি থাই, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড এবং প্যাসিফিক ডেনিম।