ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

শেয়ারবাজারে চলছে টানা দরপতন

শেয়ারবাজারে চলছে টানা দরপতন

.

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ | ২১:৫৫

টানা দরপতন চলছে শেয়ারবাজারে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত চলতি নভেম্বরের ৯ কার্যদিবসের মধ্যে আট দিনই যত শেয়ারের দর বেড়েছে, তার থেকে বেশি কমেছে। এর মধ্যে টানা ছয় কার্যদিবস দরপতন হয়েছে। তবে এর মধ্যেও দর বাড়ছে কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের। বাজারসংশ্লিষ্ট এবং বিশ্লেষক অনেকেই মনে করছেন, লোকসানি এবং রুগ্‌ণ কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির পেছনে কারসাজি চক্রের ভূমিকা রয়েছে। 

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সোমবার ৩০৬ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ১০৫টির এবং অপরিবর্তিত বা ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল ১৫৯টি। এর বাইরে ক্রেতার অভাবে ৮৬ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের কোনো লেনদেন হয়নি। বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতনে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ১২ পয়েন্ট হারিয়ে ৬২৪৫ পয়েন্টে নেমেছে। এ নিয়ে টানা চার দিনে সূচক হারিয়েছে প্রায় ৩১ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থান গত ১০ অক্টোবরের পর বা এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব শেয়ারবাজারে আছে। তবে বাজারের সংকট অনেক আগে থেকে। কেননা সিংহভাগ ভালো কোম্পানির শেয়ার আগে থেকে ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। এগুলোর লেনদেন নেই। ফ্লোর প্রাইসের ওপরে কেনাবেচা হওয়া অপেক্ষাকৃত ভালো শেয়ারগুলোর লেনদেনও সীমিত হয়ে পড়েছে।
ঢাকার শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের এমডি সমকালকে বলেন, এখন দর বাড়ছে মূলত স্বল্প মূলধনি বা যেগুলোর ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার কম রয়েছে। যেগুলোর দর বাড়ছে এর বড় অংশ রুগ্‌ণ, লোকসানি বা বন্ধ কোম্পানি। এসব শেয়ারের দরবৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তারপরও বাড়ছে। এর সঙ্গে কারসাজি চক্রের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। 

জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আল-আমীন বলেন, অনেক আগে থেকে ভালো শেয়ারে লেনদেন নেই। সব মন্দ শেয়ারের দাম বাড়ছে। এমন কোম্পানিরও দর বাড়ছে, যেগুলো বন্ধ এবং মালিকদের কোনো হদিস নেই। কেউ কেউ নামমাত্র লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়ে কোম্পানিকে ‘বি’ ক্যাটেগরি শেয়ার হিসেবে ধরে রাখছে, যাতে শেয়ার কারসাজি করতে সুবিধা হয়। খান ব্রাদার্স পিপি নামের কোম্পানি ৯ মাসে যেখানে শেয়ারপ্রতি ৩ পয়সা লোকসান করেছে, সেখানে এর শেয়ারদর সাত মাসে ৯ টাকা থেকে ৬৮ টাকা হওয়ার উদাহরণ টেনে ড. আল-আমীন বলেন, এখানে যে কারসাজি হয়েছে, তা বুঝতে ‘পিএইচডি ডিগ্রিধারী’ হওয়ার বা তদন্ত করার দরকার নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্লিপ্ততায় কারসাজি হচ্ছে। 
গতকাল ডিএসইতে সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ প্রায় ১০ শতাংশ হারে দর বেড়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শ্যামপুর সুগার মিলস এবং জিলবাংলা সুগার মিলসের শেয়ারের। এই দুই কোম্পানি বাজারে লোকসানি কোম্পানি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত দুই দিনে জিলবাংলার দর ১৩৩ থেকে ১৬১ টাকায় উঠেছে। শ্যামপুর সুগারের দর ১৫১ থেকে বেড়ে ২১৬ টাকা হয়েছে।
দরবৃদ্ধির কারণ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) বন্ধ শ্যামপুর সুগার মিলসের উৎপাদন ফের চালু করা যায় কিনা, তার সমীক্ষা প্রতিবেদন দিতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি করেছে সরকারি সংস্থাটি। গত ৯ নভেম্বর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। শেয়ারটির দর বাড়ছে গত ৬ নভেম্বর থেকে। 

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×