- শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজার লেনদেনে ব্যাপক অস্থিরতা, সামাল দেওয়ার চেষ্টা
শেয়ারবাজার লেনদেনে ব্যাপক অস্থিরতা, সামাল দেওয়ার চেষ্টা

প্রতীকী ছবি
শেয়ারবাজার লেনদেনে ব্যাপক অস্থিরতা চলছে। আগের দুইদিনের ধারাবাহিকতায় আজ বুধবারও লেনদেন শুরুর মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে শতাধিক শেয়ার ক্রেতা শূন্য হয়। প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৪২ পয়েন্ট হারিয়েছিল। তবে এর পরই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পরিস্থিতি সামাল দিতে নেমেছে বলে জানা গেছে। শুরুতে বিএসইসি সফল হলেও পরে আর সামাল দিতে পারেনি। ১২ টা নাগাদ সূচক ৪৫ পয়েন্ট হারিয়েছে।
জানা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিকে দিয়ে শেয়ার কিনিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের অবণ্টিত লভ্যাংশের টাকায় গড়া শেয়ারবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল থেকে আগেই আইসিবিকে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সে টাকায় শেয়ার কিনছে। তবে নতুন করে আর টাকা দেওয়ার কোনো কথা এখনও হয়নি বলে জানান দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।
এর বাইরে দরপতন ঠেকাতে বিক্রি বন্ধে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে চাপ দিচ্ছে সংস্থাটি।
বুধবার লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৮৬ কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২৪১টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। এ সময় দর অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল ৫১ শেয়ার।
ডিএসইএক্স সূচক ২৩ দশমিক পয়েন্ট বেড়ে ৬১২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে ৩৩১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। যেখানে গতকাল পুরো দিনে মাত্র ৩১৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল।
তবে দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর অবস্থা আরও খারাপ ছিল। সকাল ১১টায় এ বাজারে লেনদেন হওয়া ১৯২ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৪টি দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। বিপরীতে দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৩২টি এবং দর অপরিবর্তিত অবস্থায় দেখা গেছে ২৬টিকে। প্রথম ঘণ্টায় এ বাজারে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
তবে একেবারে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে, ডিএসইর স্বল্প মূলধনী কোম্পানির পৃথক শেয়ারবাজার এসএমই বোর্ডে। প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষে এ বাজারে এখন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ১৩ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে একটি ছাড়া বাকি ১২টি দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়।
আজ এ বাজারের মূল্য সূচক ১৮২২ পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত এ সূচক কমেনি। উল্টো মূল শেয়ারবাজারে যখন ব্যাপক দরপতন চলছিল, তখন এ বাজারের সূচক বেশ বেড়েছিল। সকাল ১০টা ৫ মিনিটে আগের দিনের তুলনায় ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৮৮৭ পয়েন্ট ছাড়ায়। বেলা সাড়ে ১১টায় সূচকটি ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ১৮৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।
বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, এসএমই বোর্ডের শেয়ারবাজার জুয়াড়ি চক্র খুবই সক্রিয় আছে। এ কারণে গতকাল থেকে তারা শেয়ারের দর কমতে দিচ্ছে না।
এদিকে মূল বাজারে শত শত শেয়ারে ক্রেতা শূন্য অবস্থা তৈরি হওয়ায় মঙ্গলবার লেনদেনের শেষ দেড় ঘণ্টায় আইসিবিসহ অন্য কিছু ফান্ড থেকে শেয়ার কিনিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া শুরু হয়। গতকাল তাতে খুব সফলতা না পেলেও আজ লেনদেনের শুরু থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে নামে।
কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও বড় ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে আগ্রাসিভাবে শেয়ার কিনে দরপতন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে বলেও বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা জানান।
এ কারণে সকাল ১০টা মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ৪২ পয়েন্ট হারিয়ে ৬১১১ পয়েন্টে নামার মাত্র ২০ মিনিট পর ওই সূচকই ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬১৮৮ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। সূচকের এ অবস্থান গতকালের ক্লোজিং অবস্থান ৬১৫৩ পয়েন্ট থেকেও ৩৫ পয়েন্ট ওপরে ছিল।
কিন্তু আগ্রাসী শেয়ার ক্রয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
সকাল ১১টার পর থেকে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। এ সময় অন্তত ১৩৪ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হচ্ছিল। এর সিংহভাগের বিপুল সংখ্যক বিক্রেতা ছিল, কিন্তু ক্রেতা ছিল না। অন্য সব শেয়ারেও বিপুল সংখ্যক বিক্রেতার বিপরীতে হাতেগোণা ক্রেতার দেখা মিলছে।
মন্তব্য করুন