- শেয়ারবাজার
- ব্লক মার্কেটে নজিরবিহীন ৫২ শতাংশ লেনদেন!
শেয়ারবাজার
ব্লক মার্কেটে নজিরবিহীন ৫২ শতাংশ লেনদেন!

প্রতীকী ছবি
ব্লক মার্কেটের লেনদেনে ভর করে মঙ্গলবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর মোট লেনদেন আগের দিনের চেয়ে বেড়ে ২৬৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। সোমবারের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। তবে এ লেনদেনের মধ্যে ১৪০ কোটি টাকারও লেনদেন ছিল শুধু ব্লক মার্কেটে, যা মোটের ৫২ শতাংশ। এর আগে নির্দিষ্ট কোনো দিনের লেনদেনের অর্ধেকের বেশি লেনদেন ব্লক মার্কেটে হওয়ার নজির নেই।
বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্নিষ্টদের অনেকের ধারণা, সার্বিক লেনদেনে পতন আড়াল করতে শেয়ারবাজার সংশ্নিষ্ট প্রভাবশালী কোনো পক্ষের প্ররোচণায় ব্লক মার্কেটে নিজেরই এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে শেয়ার কেনাবেচা করে থাকতে পারেন কেউ কেউ। তবে এ নিয়ে ভিন্নমতও আছে। কেউ কেউ মনে করছেন, বার্ষিক হিসেবে শীর্ষ ব্রোকারের পদ ধরে রাখতেও বছর শেষে কোনো কোনো ব্রোকার এভাবে শেয়ার কেনাবেচা করেছে। আবার বছর শেষে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলতে ব্লক মার্কেটে স্বাভাবিক লেনদেন করে থাকতে পারে।
সে কারণেই ব্লক মার্কেটে লেনদেনের অংশ অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে এবং পাবলিক মার্কেটে কমেছে। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, দরপতনের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন। ফ্লোর প্রাইস আরোপের কারণে যা আরও তীব্র হয়েছে। প্রতিদিনই লেনদেনের যে কোনো সময় দুই শতাধিক শেয়ার ক্রেতাশূন্য থাকছে। এ ধরনের কিছু শেয়ারে ব্লক মার্কেটে কেনাবেচা বেড়েছে, কমেছে পাবলিক মার্কেটে।
পাবলিক মার্কেটে যে কোনো বিনিয়োগকারী যে কোনো অঙ্কের শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন। তবে ব্লক মার্কেটে একটি লেনদেনে ৫ লাখ টাকা মূল্যের কম শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ নেই। মূলত বড় অঙ্কের শেয়ার কেনাবেচা করতে গিয়ে মূল শেয়ারবাজারে শেয়ারের দরে যাতে বড় প্রভাব না পড়ে, তার জন্য এ বাজার বড় ভূমিকা রাখে। তবে কারসাজির চক্র বা ব্রোকাররাও নিজের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে শেয়ার হস্তান্তরে এ বাজারকে ব্যবহার করেন।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ব্লক মার্কেটে ৫৮ কোম্পানির ১৪০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হলেও এর মধ্যে শুধু বেক্সিমকো ফার্মার লেনদেন ছিল ৮১ কোটি টাকার। এ ছাড়া ব্লকে রেনাটার ২২ কোটি টাকার, সোনালি পেপারের ৯ কোটি টাকার লেনদেন ছিল এর পরের অবস্থানে।
ব্লক মার্কেটের লেনদেন বাদে গতকাল ডিএসইর পাবলিক মার্কেটে ১২৯ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। সোমবার মোট ১৯৯ কোটি টাকার লেনদেনে পাবলিক মার্কেটের অংশ ছিল ১৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সার্বিক হিসেবে প্রায় ৭১ কোটি টাকা লেনদেন বাড়লেও পাবলিক মার্কেটের লেনদেন কমেছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি ডিসেম্বরে গতকাল পর্যন্ত ৬ হাজার ৬২৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এতে ব্লক মার্কেটের অংশ ছিল মোটের ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস আরোপের পরের মাস গত আগস্টের ২৫ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচায় ব্লক মার্কেটের অংশ ছিল মাত্র ৪ দশমিক ১১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের ৩৫ হাজার ৪৮০ কোটি টাকার লেনদেনে ব্লক মার্কেটের অংশ ছিল ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অক্টোবরের ২১ হাজার ৯২ কোটি টাকার লেনদেনে ব্লক মার্কেটের অংশ ছিল ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। নভেম্বরের ব্লক মার্কেটের অংশ ছিল ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
মন্তব্য করুন