- শেয়ারবাজার
- ব্লক মার্কেটে ৪৪% লেনদেন ফ্লোর প্রাইসের নিচে
শেয়ারবাজার
ব্লক মার্কেটে ৪৪% লেনদেন ফ্লোর প্রাইসের নিচে

মূল বাজারে ক্রেতা না পেয়ে কিছু বিনিয়োগকারী ব্লক মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা করছেন। এমনকি বেঁধে দেওয়া ফ্লোর প্রাইসের তুলনায় কম মূল্যেও বিক্রি করছেন তাঁরা। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রেতা মিলবে না– এমনটা প্রায় নিশ্চিত জেনে অনেকে শেয়ার বিক্রির আদেশও দিচ্ছেন না।
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসের লেনদেনের হিসাব পর্যালোচনায় দেখা গেছে, টাকার অঙ্কে স্টক এক্সচেঞ্জের ব্লক মার্কেটে যে পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে, তার ৬৬ শতাংশ ফ্লোর প্রাইস বা বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন দরসীমায় পড়ে থাকা শেয়ারের। আবার ব্লক মার্কেটের মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশ শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে ফ্লোর প্রাইসের তুলনায় কম মূল্যে।
তিন মাস আগে যেখানে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হতো, এখন তা হাজার কোটি ছাড়িয়েছে। তবে সার্বিক অবস্থা খুব বেশি হেরফের হয়নি। যদিও মোট লেনদেনের তুলনায় ব্লক মার্কেটের লেনদেন অনেকটাই কমেছে। রোববার লেনদেন শেষে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা সংখ্যা ২১২টিতে নেমেছে। গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ ৩০৪ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে ছিল। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হলেও এখনও ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের ৭০ শতাংশের বেশি ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে।
চলতি বছরের ২৮ মে পর্যন্ত ডিএসইতে ৫৫ হাজার ১৭১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ব্লক মার্কেটে কেনাবেচা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকার শেয়ার, যা মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১১ হাজার ৭২৭ কোটি টাকার লেনদেনে ব্লক মার্কেটের অংশ ছিল ১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা, যা মোটের ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি এপ্রিল পর্যন্ত এ হার ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ১৪ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
চলতি মে মাসে এ পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ১১৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ব্লকে কেনাবেচা হয়েছে ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকার শেয়ার। যা মোটের ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ মাসে ব্লকে কেনাবেচা হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৭৭৭ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয় ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা কোম্পানির, যা মোটের ৬৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আবার এর মধ্যে ফ্লোর প্রাইসের তুলনায় কম মূল্যে কেনাবেচা হওয়া শেয়ারের মূল্য ছিল প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা, যা সোয়া ৬৬ শতাংশ বা ব্লক মার্কেটের মোট লেনদেনের প্রায় ৪৪ শতাংশ।
শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ারগুলোর বিক্রেতা আছে, ক্রেতা নেই। জরুরি প্রয়োজন বা অন্য কারণে বিনিয়োগ তুলতে কিছু বিনিয়োগকারী ব্লক মার্কেটে শেয়ার বিক্রি করছেন। আবার অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি বা কারসাজির সময়ও কৌশলগত কারণে কেউ কেউ এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে শেয়ার হস্তান্তর করছেন ব্লক মার্কেটের মাধ্যমে।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সিইও সাফফাত রেজা বলেন, যখন বাজার মূল্যে পাবলিক মার্কেটে শেয়ার কেনার কেউ নেই, তখন ব্লক মার্কেটে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ আছে। যাঁদের জরুরি টাকা প্রয়োজন, তাঁরা কম মূল্যে এ বাজারে শেয়ার বিক্রি করছেন। অন্যদিকে যাদের কাছে অলস অর্থ আছে, তাঁরাও ভবিষ্যতে বেশি লাভের আশায় এ শেয়ার কিনছেন।
স্টক এক্সচেঞ্জে যে কোনো অঙ্কের শেয়ার কেনাবেচার মূল বাজারটি পাবলিক মার্কেট হিসেবে পরিচিত। তবে ব্লক মার্কেটে শুধু ৫ লাখ টাকা বা তার বেশি মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা করা যায়।
মন্তব্য করুন