ডিএসইর লেনদেন আটকে আছে তিনশ কোটির ঘরে
ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:০০
শেয়ারবাজারে দরপতন অব্যাহত। গতকাল মঙ্গলবারও ৬৩ শতাংশ শেয়ারের দর পতন হয়েছে। বিপরীতে বেড়েছে ২৪ শতাংশের কম শেয়ারের। ক্রমাগত পুঁজি হারানোয় বিদ্যমান বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগের ক্ষমতা বা বিনিয়োগ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে প্রতিদিনই লেনদেন কমছে, তলানিতে নামছে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ।
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৩১৮ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। চলতি অক্টোবরে গতকাল পর্যন্ত ৯ কার্যদিবসের আট দিনই শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকার ঘর ছুঁতে পারেনি। গড়ে ৩৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস-সংশ্লিষ্টরা বলেন, ক্রমাগত দর পতনে সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীর মধ্যে হতাশা বেড়েছে। কিছু বিনিয়োগকারী রাগে-দুঃখে সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কম-বেশি সব শেয়ারে ক্রেতা আছে। তবে সবাই সতর্ক। যারাই একটু-আধটু শেয়ার কিনছেন, তাদের প্রায় সবাই ঝুঁকি বিবেচনায় যতটা সম্ভব কম মূল্যে শেয়ার কেনার চেষ্টা করছেন। এতে শেয়ারের বিক্রির চেষ্টার বিপরীতে ক্রয় চাহিদা বাড়ছে না, ফলে শেয়ারদর কমছে।
ইলেকট্রনিক শেয়ার ধারণ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সিডিবিএল প্রকাশিত তথ্যেও এর আলামত মিলছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসে সম্পূর্ণ খালি হওয়া বিও অ্যাকাউন্ট সংখ্যার তুলনায় নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সংখ্যা কমছে। যেমন– এ সময়ে সাড়ে ১০ হাজারের বেশি বিও খালি হয়েছে। ফলে খালি হওয়া বিও সংখ্যা বেড়ে ৩ লাখ ২২ হাজারে উন্নীত হয়েছে, যা গত আগস্ট শেষে ছিল ৩ লাখ ৯ হাজার ৪৩৪টি। এ সময়ে নতুন খোলা ৮ হাজার ৬৩৮টি বিও অ্যাকাউন্টের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯৮৭টিতে শেয়ার কেনা হয়নি।
চলতি দর পতনকেই এ জন্য দায়ী করে শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের এমডি সমকালকে বলেন, ব্যাংকের সুদহার চড়া হওয়ার কারণে বড় ও কৌশলী বিনিয়োগকারীরা এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগমুখী নন। এতে বাজারে ক্রয় চাহিদা কম। বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের নতুন করে বিনিয়োগের ক্ষমতা কম। এর বিপরীতে মার্জিন ঋণে কেনা শেয়ারে দর পতনে গ্রাহক নতুন করে অর্থ দিয়ে ঋণ হার সমন্বয় করছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো ফোর্স সেল করছে, যা বাজারের দর পতনকে একরকম স্থায়ী রূপ দিচ্ছে।
ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা জানান, ছয় মাস আগের তুলনায় বহু শেয়ারের দাম ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কম। কারণ এর বেশির ভাগই জাল-জালিয়াতি ভুয়া সম্পদের বিপরীতে ভুয়া শেয়ার ইস্যু করে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কী ব্যবস্থা নেয়, তার ভয়ে এসব শেয়ার কিনতে সাহস করছেন না বিনিয়োগকারীরা।
- বিষয় :
- শেয়ারবাজার