রিজওয়ান-জামানের ব্যাটে পাকিস্তানের লড়াকু পুঁজি

অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ১৭৭ রানের টার্গেট দিলো পাকিস্তান। দুবাইয়ে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তান ৪ উইকেটে ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করিয়েছে। ফলে ফাইনালে উঠতে হলে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ১৭৭ রান।

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের করা ১৭২ রান। সেটিকে ছাড়িয়ে দুবাইয়ের মাঠে এবারের আসরের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডই গড়ল বাবর আজমের দল।

ফাইনালের দৌড়ে এই ম্যাচে টস হেরেছে পাকিস্তান। টস জিতে বাবর আজমদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অজি দলপতি অ্যারন ফিঞ্চ। টস হেরে পাকিস্তানের হয়ে ওপেন করতে নামেন বাবর আজম ও মোহম্মদ রিজওয়ান। শুরুতে সাবধানী ব্যাট চালালেও সময়ের সাথে বড় শট খেলেন দুই ওপেনার। ম্যাচের তৃতীয় ওভারে রিজওয়ানের ক্যাচ ফেলে দেন ডেভিড ওয়ার্নার। ম্যাক্সওয়েলের বলে উড়িয়ে মারা বল  অনেকটা দৌড়ে ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেন ওয়ার্নার। কিন্তু বল তার হাতে লেগে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে চলে যায়। উইকেট হারানোর বদলে চার রান উপহার পায় পাকিস্তান। 

ম্যাচের ষষ্ট ওভারে ফের ক্যাচ মিস। এবার কামিন্সের বলে রিজওয়ানের ক্যাচ ছাড়েন জাম্পা। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৪৭ রান তুলেছে পাকিস্তান। পাওয়ারপ্লে'তে এর আগে ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান তুলেছিল পাকিস্তান। দলীয় ৭১ রানে অ্যাডাম জাম্পার বলে ডেভিড ওয়ার্নারের তালুবন্দী হন পাকিস্তানের অধিনায়ক। ৩৪ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন বাবর আজম।

১৪ তম ওভারের পঞ্চম বলে রিজওয়ানের ছক্কায় ১০০ ছাড়িয়েছে পাকিস্তানের স্কোর। পরের বলে ১ রান নিয়ে রিজওয়ান পৌঁছে যান ফিফটিতে। ৪১ বলে ফিফটি পান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি তার ২৭তম ফিফটি। এবারের বিশ্বকাপে তৃতীয়।

সতেরোতম ওভারে বল করতে আসেন হ্যাজেলউড। ফখর জামান ও রিজওয়ান দুটি ছক্কা মারেন। রিজওয়ানডের ব্যাট থেকে আসে একটি চার। এছাড়া দুই সিঙ্গেল, এক ডাবল ও নো বলে মোট ২১ রান পায় পাকিস্তান।

দলীয় ১৪৩ রানে মিচেল স্টার্কের বলে স্টিভ স্মিথের তালুবন্দী হয়ে ফেরেন রিজওয়ান। ৩ চার ও ৪ ছক্কার সাহায্যে ৫২ বলে ৬৭ রান করে ক্রিজ ছাড়েন তিনি। তার ফেরার পরপরই সাজঘরে ফেরেন আসিফ আলী। কোনো রান না করেই স্টার্কের বলে স্টিভ স্মিথের তালুবন্দী হন তিনি।

দলীয় ১৬১ রানে ফখর জামানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন স্টিভ স্মিথ। স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতেই শোয়েব মালিককে ফেরান মিচেল স্টার্ক ২ বলে ১ রান করে বোল্ড হন তিনি। 

৩ চার ও ৪ ছক্কার সাহায্যে ৩১ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ফখর জামান। স্টার্কের বলে পরপর ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতরানের গণ্ডি টপকে যান তিনি। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১৭৬ রান।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুই উইকেট শিকার করেন স্টার্ক। একটি করে উইকেট পান কামিন্স ও জাম্পা।

পাকিস্তান একমাত্র দল হিসেবে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে প্রবেশ করেছে। সুপার টুয়েলভে তারা জিতেছে ভারত, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড ও নমিবিয়ার বিপক্ষে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া সুপার টুয়েলভের ৫ ম্যাচের মধ্যে ৪টিতে জয় তুলে নিয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে হারলেও অজিরা পরাজিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে। এখন অপেক্ষার পালা, সেমিফাইনালের মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে টেক্কা দেয় কোন দল। 

গুরুত্বপূর্ণ সেমিফাইনালের আগে পাকিস্তান দল দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল দুই নির্ভরযোগ্য তারকা রিজওয়ান ও মালিকের অসুস্থতার খবরে। তবে স্বস্তির খবর, দুই তারকাই ফিট হয়ে উঠেছেন। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পূর্ণশক্তির দল নিয়েই শেষ চারের লড়াইয়ে নেমেছে পাকিস্তান।

পাকিস্তান একাদশ: 

বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), ফখর জামান, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক, আসিফ আলি, শাদাব খান, ইমাদ ওয়াসিম, হাসান আলী, হারিস রউফ, শাহিন শাহ আফ্রিদি।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: 

ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), মিচেল মার্শ, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথু ওয়েড (উইকেটরক্ষক), প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলউড।