ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

কর্মযোগ্য প্রশিক্ষণ: কোডার্সট্রাস্ট

কর্মযোগ্য প্রশিক্ষণ: কোডার্সট্রাস্ট

স্বপ্নদ্রষ্টা আজিজ আহমদ

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাব্বিন হাসান

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ | ১৭:১১ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬:৫৬

ভবিষ্যতে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের ৬৫ শতাংশ লোক কর্ম-অযোগ্য হয়ে পড়বে, যার প্রধান কারণ কারিগরি জ্ঞানের অভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি থাকার পরও চাকরি পেতে কয়েক বছর সময় নষ্ট হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা কোডার্সট্রাস্টের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডিজিটাল স্কিলস দিয়ে দ্রুত কর্মবাজারে প্রবেশ করতে পারবেন। যারা এখন কাজকর্মে আছেন, তাদেরও প্রতিনিয়ত দক্ষতা বাড়াতে হয়। নিজের দক্ষতাকে আরও সুদক্ষ করার চ্যালেঞ্জ নিতে হয় বলে জানালেন স্বপ্নদ্রষ্টা আজিজ আহমদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাব্বিন হাসান

সারাদেশের জেলা-উপজেলার স্কুল-কলেজের বেকার যুবসমাজ ও ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ শিক্ষার্থী, কিশোর-কিশোরীকে ফ্রিল্যান্সিং, কোডিং এবং প্রোগ্রামিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে আইসিটি অধিদপ্তর ও আইটি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ ও ডিজিটাল কর্মশক্তিতে রূপান্তরে ইতোমধ্যে ৭০ হাজার প্রশিক্ষণ দিয়েছে ‘কোডার্সট্রাস্ট’; যা আইসিটি খাতে অনন্য উদাহরণ। নতুন প্রজন্মকে সুদক্ষ হিসেবে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ তৈরি ও পরিবর্তনশীল বিশ্বের যোগ্য করে তুলতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
চট্টগ্রামের পর ঢাকায় কোডার্সট্রাস্ট নতুন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। 
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি উদ্যোগ কারিগরি শিক্ষামানের উন্নয়নে প্রশংসনীয় কাজ করছে। নিজেদের আত্মকর্মসংস্থান নয়, বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন কোডার্সট্রাস্টে প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। শুধু চাকরি নয়, বরং চাকরি দেওয়ার মতো প্রশিক্ষণ।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট সজীব ওয়াজেদ জয় প্রদত্ত দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল। সরকার ৫৩ হাজার প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কিন্তু কোডার্সট্রাস্ট দিয়েছে ৭০ হাজার প্রশিক্ষণ। তাদের অগ্রযাত্রায় সরকার গর্বিত। ক্যাশলেস সোসাইটির পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। 

ডা. দীপু মনি

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে এবং দেশে-বিদেশে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কোডার্সট্রাষ্টের মাধ্যমে আজিজ আহমদ অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। 


শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি কোডার্সট্রাস্ট প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোডার্সট্রাস্ট বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়নরত। বাংলাদেশের মানচিত্রই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলে। এত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে যদি আইটিতে দক্ষ করে তোলা যায়, তাহলে বাংলাদেশের চিত্র বদলে যাবে জাদুর মতো। তাই বিশ্বমানের সব প্রশিক্ষণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিপুল শিক্ষার্থীর জন্য কর্মসংস্থানে অপার সুযোগ তৈরি করবে।

আইটি শিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা আজিজ আহমদ জানালেন, কর্মবাজারে টিকে থাকতে প্রতি পাঁচ বছরে বিশ্বের ৪৫ শতাংশ কর্মীকে নতুন কিছুতে দক্ষ হতে হয়; না হলে পিছিয়ে যেতে হয়। থাকে কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রায় ডিজিটাল দক্ষতাই সবচেয়ে বড় শক্তি। জনশক্তিকে ডিজিটাল শক্তিতে রূপান্তরের চেষ্টায় কাজ করছে কোডার্সট্রাস্ট। যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে লেখাপড়ার সময় রোবটিকস শেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে আজিজ আহমদ বলেন, কোডার্সট্রাস্টের সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্কুল পর্যায়ে রোবটিকস বিজ্ঞান ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষায় উৎসাহিত ও দক্ষ করতে চাই।

২০১০ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল ১ শতাংশ, যা এখন ১৭ শতাংশ। ১৭ থেকে ৫০ শতাংশে পৌঁছাতে কোডার্সট্রাস্ট দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে পারবে। তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন জরুরি।

বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজড করে সমতায়নে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে উন্নত করে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমানে কোডার্সট্রাস্টের নিয়মিত কোর্সের মধ্যে আছে– ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, অ্যাডভান্সড এক্সেল, ভিডিও এডিটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলভমেন্ট ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট। বাংলাদেশে দুটি পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে আইসিটি খাতের অন্যতম উদ্যোক্তা ও কোডার্সট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আজিজ আহমদ। পুরস্কার দুটি হলো বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ও এনআরবি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড।

ঢাকায় এনআরবি প্রফেশনালস সামিটে এনআরবি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন আজিজ আহমদ। তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতে ডিজিটাল দক্ষতা সৃষ্টিতে এ পুরস্কারে ভূষিত হন। আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান কোডার্সট্রাস্টের গ্র্যাজুয়েটরা বৈশ্বিক কর্মবাজারে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশে আইসিটি খাতে উদ্ভাবন, নেতৃত্ব ও অবদানের জন্য আজিজ আহমদ পুরস্কৃত হন।

সালমান এফ রহমান উদ্যোক্তা আজিজ আহমদ প্রসঙ্গে জানান, এখন কোডার্সট্রাস্ট সরকারের আইসিটি ডিভিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইউল্যাব ও ইউএনডিপির সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে যথাযথ পরিবর্তন এনে শিক্ষার্থীদের আইসিআর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। ন্যানো টেকনোলজি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, মেটাভার্স, আইওটির কারণে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে শিক্ষার্থীদের যোগ্য করার লক্ষ্যেই কাজ করছে কোডার্সট্রাস্ট। 

আরও পড়ুন