ঢাকা শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

অ্যাপে সুরক্ষা কৌশল

অ্যাপে সুরক্ষা কৌশল

ফাইল ছবি

রেজওয়ান রহমান

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:৫৭

চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা ফেরদৌসী বেগমের দিন কাটে সংসার ও দুই সন্তানের পেছনেই। কাজের ব্যস্ততা সেরে তিনি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ দিয়ে খোঁজখবর নেন গ্রামে থাকা মা-বাবার। অথচ ইন্টারনেটে কল দেওয়া, রিসিভ করা ও ব্লক দেওয়া ছাড়া সাইবার জগতের খুঁটিনাটি কিছুই জানেন না।
অনলাইনে যথেষ্ট সময় পার করা সত্ত্বেও সাইবার জগতের ঝুঁকির বিষয়ে জানেন না ফেরদৌসীর মতো অনেকে। 
ফলে প্রতিদিন বাড়ছে হ্যাকিং থেকে শুরু করে বহুমাত্রিক সাইবার প্রতারণা।
অধিকাংশ সময় ‘ডিজিটাল সেফটি এডুকেশন’ শুধু প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েই সীমিত হয়। অথচ প্রযুক্তিবিষয়ক জ্ঞান যাদের পরিমিত, তাদের জন্য সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। ডিজিটাল সুরক্ষা নিয়ে না জানার কারণে কয়েক ধরনের প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হন নারীরা। তাই ডিজিটাল সুরক্ষায় প্রয়োজন সচেতনতামূলক কার্যক্রম।
ব্যক্তিক্ষেত্রে যেসব বিষয় জরুরি তা হলো প্রথমেই মনে রাখতে হবে, কারও সঙ্গে কোনো ওটিপি শেয়ার করা যাবে না এবং কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। বাসায় কম্পিউটার থাকলে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের আলাদা পাসওয়ার্ডভিত্তিক প্রোফাইল থাকা শ্রেয়। সহজেই অনুমেয় পাসওয়ার্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। হ্যাকারদের প্রতিহত করতে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখতে হবে।
অনলাইনে যুক্ত সবকটি অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক সব পদ্ধতি কার্যকর ও সহজে ব্যবহারযোগ্য। যেমন– ইমোর ‘পাসকি’ ফিচার, যা একটু দেখিয়ে দিলেই ফেরদৌসীর মতো যে কোনো ইমো ইউজার তা সহজে ব্যবহার করতে পারবেন।
এ ছাড়া অপ্রত্যাশিত লিঙ্কে কখনও ক্লিক করা যাবে না। বিশেষ করে যদি আর্থিক সুবিধা বা তথ্য ফাঁসের (জরুরি তথ্য জানতে চাওয়া) সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো বার্তা আসে। ব্যক্তিগত কোনো তথ্য, বিশেষ করে পাসওয়ার্ড, অরক্ষিত চ্যাটের মাধ্যমে শেয়ার করা যাবে না। শেয়ার করতেই হলে এনক্রিপ্ট করা প্ল্যাটফর্মে প্রাইভেসি মোড ব্যবহার করতে হবে।
ব্যক্তি তথ্য, যেমন– ঠিকানা বা আর্থিক তথ্য কখনও পাবলিক করা যাবে না। টাকা বা ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে আসা বার্তা বা ফোনকলের ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকতে 
হবে। প্রয়োজনে পরিচিত কারও কাছ থেকে তা 
যাচাই করে নিতে হবে।
ইদানীং বেশ কিছু ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম সবার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ইমো উদাহরণযোগ্য। কয়েকটি উদ্ভাবনী সিকিউরিটি ফিচারের মাধ্যমে হ্যাকিং ঝুঁকি কমিয়ে গোপনীয়তা নিশ্চিতে তারা কাজ করছে। অ্যাপে ‘প্রাইভেসি চ্যাট’ নামক ফিচারের মাধ্যমে যে কোনো চ্যাটে সোয়াইপ আপ করলেই ওই চ্যাটটি এনক্রিপ্টেড ও সুরক্ষিত হবে।
ইমো অ্যাপে প্রবেশে ‘সিকিউরিটি ও প্রাইভেসি’ সেটিংয়ে ক্লিক করলেই ফিচারটি মেসেজিং অ্যাপে চলতি কোনো দুর্বলতা সক্রিয়ভাবে চিহ্নিত করে দেবে। অ্যাপে নিজে থেকেই ‘প্রাইভেসি মোড’ সক্রিয় হবে, যাতে করে চ্যাট ও কল হবে সুরক্ষিত। এমন অনেক ফিচার রয়েছে আধুনিক সময়ের মেসেজিং সবকটি অ্যাপে।
তা ছাড়া নিয়মিত অ্যাপ আপডেট করতে হবে।
কারণ আপডেটে প্রায়ই ‘সিকিউরিটি ফিক্স’ থাকে, যা সুরক্ষা নিশ্চিত করে। অন্যদিকে যে কোনো অজানা কনট্যাক্ট ও লগইন ডিভাইস যাচাই করে নেওয়া উচিত। অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ বা কল পেলে রেসপন্স করার আগে পরিচয় যাচাই আবশ্যক। সারাবিশ্বে ব্যক্তি নিরাপত্তা অনলাইন অধিকারের অংশ, তবে নিজের সচেতনতা সবার আগে।

আরও পড়ুন

×