ইনোভেশন
বাড়ি চলো বলছে রোবট!
চীনের সাংহাইয়ে রোবট প্রদর্শন হলে এরবাই
সাদি সাবেরিন
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:২৯ | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২:৫৫
দশক দুই আগেও স্বাভাবিক জীবনে একেবারে অচেনা ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ভাষান্তরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। অথচ তার হাত ধরেই যে শৈশবের কৌতূহল নিরসনের পথ তৈরি হবে, কে জানত?
কিছুদিন আগে চীনের সাংহাইয়ে রোবট প্রদর্শন হলে হাজির এরবাই; হাংঝৌয়ের রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তৈরি এআই-সংবলিত খুদে রোবট। ১২টি রোবট জিজ্ঞেস করল রোবট এরবাইকে– তোমাদের কাজ শেষ হয় কখন?
মানুষের কাজের সুনির্দিষ্ট সময় থাকলেও রোবটের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। ফিরতি সদুত্তরে এলো– ছুটি নেই আমাদের। এরবাইয়ের প্রশ্ন: কী বলছ! তোমরা বাড়ি ফেরো কখন? উত্তর জানা। ঘর-সংসার, পরিবার-পরিজন থাকলেও যন্ত্রমানবের তা নেই। ফলে এবার উত্তর এলো, ঘর বলে কিছু নেই আমাদের!
চমক ঠিক এখানেই অপেক্ষা করছে। এরবাই বলে, তা হলে তোমরা আমার সঙ্গে আমার ঘরে চলো। খুদে এরবাইয়ের কথা মেনেও নেয় বাকিরা। ১২টি যন্ত্রমানব নিয়ে এরবাই প্রদর্শনী হল ছাড়ে। উল্লিখিত এমন ভিডিও প্রকাশ্যে আসতে চমকে উঠেছে নেট দুনিয়া, রোবটের ভাবনার পরিধি তাহলে কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে!
নির্মাতারা (এরবাই) অবশ্য মেনেই নিয়েছেন, ঘটনাটি পুরোপুরি সাজানো, গবেষণার অংশ এটি। কিন্তু তারা এরবাইকে মোটেই এতটা স্বাধীনতা দেননি, যাতে সে পুরো মানুষের মতো বার্তালাপ করে বা নিজের মতো ভাবনাচিন্তা উপস্থাপন করে বসে। যদি এরবাই যে কোনো উপায়ে ওই ১২টি রোবটের সিকিউরিটি অ্যাকসেস পেয়ে যায়, তাহলে তাদের সে নিজের অধীনে নিয়ে আসতে পারে।
কিন্তু কী করেই বা সে মানুষের মতো বার্তালাপ বলতে শুরু করল, তাও এখন নির্মাতারা অনুসন্ধান করছেন।
বিষয়টি যদিও ভাবতে মজার। ঘটনাটা শঙ্কাও বাড়িয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে গভীর থেকে গভীরতর। উদ্ভাবন প্রতিযোগিতায় একের পর এক রোবট সৃষ্টির দুর্দান্ত সময় এখন। সত্যিই যদি তারা হুটহাট বেঁকে বসে, যদি সত্যিই কাজের যোগ্য মজুরি বা মানুষের মতো ন্যায্য পাওনা ছুটি দাবি করে– তখন কী হবে, ভাবুন তো একবার। ওই দিন কি মানুষ সশস্ত্র রোবট-বিপ্লব দেখব, সত্যিই কি কল্পবিজ্ঞানের ভাষায় ছবির মতো দুনিয়াটা যন্ত্রমানবের দলের কাছে ধরাশায়ী হবে!
চীনের ঘটনাটি সত্যিকার অর্থেই অনভিপ্রেত। অথচ জরুরি ও প্রাসঙ্গিক পাওয়ার ডায়নামিকসের দিকে ইঙ্গিত করে ক্ষমতার সূক্ষ্ম হস্তান্তর ঘটায়। বলা যায়, কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এখন বিস্তর কথা উঠছে, কাজের সময় কত হওয়া উচিত, তা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলে হরহামেশা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময়ের কোনো ঠিকও থাকছে না, পুঁজিবাদীরা কর্মীদের কর্মঘণ্টা বাড়াতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাহলে রোবট স্বনিয়ন্ত্রিত হয়ে গেলে কী ঘটবে অদূর ভবিষ্যতে, ভেবে দেখুন না হয়!
- বিষয় :
- রোবট