ঢাকায় বৃহস্পতিবার শুরু 'ডব্লিউসিআইটি ২০২১'

‘আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুলাইজার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১১ থেকে ১৪ নভেম্বর ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বিশ্ব সম্মেলন 'ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি' (ডব্লিউসিআইটি) এর ২৫তম আসর। বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে অনলাইনে এ সম্মেলনে যুক্ত হওয়া যাবে।

‘ডব্লিউসিআইটি ২০২১’ সম্মেলনের সমান্তরালে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া  এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অ্যাসোসিও ‘ডিজিটাল সামিট ২০২১’। অনুষ্ঠানটি ফিজিক্যাল ও ভার্চুয়াল মডেলে অনুষ্ঠিত হবে।

দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা)  উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করছে। 

এ আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে বেসিস, বাক্কো, ই-ক্যাব এবং আইএসপিএবি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।  

আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ৪ দিনের সম্মেলনে থাকছে সেমিনার, মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স, বিটুবি সেশন। অনলাইনে নিবন্ধন করে  সেমিনারগুলোতে অংশ নেওয়া যাবে।  

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। 

এদিন মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। দেশি বিদেশি মন্ত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন, ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন কেউ কেউ।

১২ নভেম্বর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীন সর্বোভৌম রাষ্ট্র ও তথ্য প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর গৃহিত উদ্যেগসমূহ উপস্থাপন করা হবে। এ দিনে ‘অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।

১৩ নভেম্বর, সন্ধ্যায় বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে, ডব্লিউসিআইটি-এর রজত জয়ন্তী উদযাপিত হবে।

চার দিনের এই বিশ্ব সম্মেলনে বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন সারাবিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, এবার গ্রামের প্রত্যেকটি স্কুল ও সরকারি অফিসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সংযুক্ত করা হবে। দুর্গম দ্বীপে সব ধরনের প্রযুক্তি সেবা পৌছে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, গত প্রায় ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যে অর্জন তা এই সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ঐতিহাসিক রূপকল্প ঘোষণা করেছিলেন, সেটি ছিল ২০২১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবে তখন বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা, ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট, সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুদক্ষ নেতৃত্বে মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করা সম্ভব হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আইসিটির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণমুক্ত সোনার বাংলার আধুনিক রূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ আর কল্পনা নয়, বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত 'ডব্লিউসিআইটি ২০২১' আমরা  আয়োজন করতে যাচ্ছি।  শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য,  প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং বিচারিককার্যে বৈষম্য দূর করা এবং বাংলাদেশকে শ্রমনির্ভর অর্থনীতির দেশ থেকে একটি প্রযুক্তি ও মেধানির্ভর ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে আইসিটিকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। গত ১২ বছরে আইসিটি খাতে সঠিক অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে কভিড-১৯ মহামারিতেও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সবকিছু সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। 

সম্মেলনের বিভিন্ন অংশ উপভোগ করার জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে 'WCIT 2021' নামের অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যাবে। তবে ব্যবহারের পূ্র্বে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

এছাড়া www.wcit2021.com.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে ভার্চুয়ালি সম্মেলন ও প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে। ফিজিক্যাল এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশন-সহ ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনের যাবতীয় তথ্য www.wcit2021.org.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। 

আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান ও বিসিএসের সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। 

এছাড়া, ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের সেক্রেটারি জেনারেল জেমস এইচ পয়সান্ট অনলাইনে যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।