- প্রযুক্তি
- শিল্পীরা অনুদানে নয়, কাজ করে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায়: ইলিয়াস কাঞ্চন
শিল্পীরা অনুদানে নয়, কাজ করে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায়: ইলিয়াস কাঞ্চন

ইলিয়াস কাঞ্চন। বরেণ্য অভিনেতা ও 'নিরাপদ সড়ক চাই' আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন এবং শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় 'বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি'র নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়বেন। এই নির্বাচন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তার সঙ্গে-
'বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি'র নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়ছেন। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী?
নির্বাচনে লড়াই করার বিষয়টি হঠাৎ জানানো হলেও আসলে দীর্ঘদিন ধরেই আলাপ-আলোচনা চলছিল। সত্যি বলতে কি, আমি কোনো নির্বাচনের জন্য আগ্রহী নই। আমি যে নিজের ইচ্ছায় প্রার্থী হয়েছি, তা নয়; আমাকে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের অবস্থা ও পরিণতি সম্পর্কে তরুণরা বলছিল। তরুণদের কথা ভেবে দেখলাম, তারা আমাকে ভুল বলেনি। চলচ্চিত্র সহকর্মীদের পাশাপাশি বাইরেরও অনেকে আমাকে নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়েছেন। আমার সহকর্মীদের মধ্যে শুধু যে শিল্পী সমিতির লোকজন, তা কিন্তু নয়। প্রযোজক, নির্মাতা, ক্যামেরাম্যান, নাচের অ্যাসোসিয়েশন ও ফাইটার গ্রুপ, মেকআপম্যানের গ্রুপ সবাই আমাকে বলেছেন। তাদের আবদার না করতে পারিনি। তাদের প্রতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা থেকেই শিল্পী সমিতির নির্বাচনে লড়াই করছি। গতকাল তারা আমার কাছে একটাই দাবি নিয়ে এসেছেন। তা হলো, সবাই মিলে চলচ্চিত্র শিল্প সুন্দর করে সাজাতে চাই। তাদের এই আহ্বান আমার ভালো লেগেছে।
প্যানেল কীভাবে সাজিয়েছেন...
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন আগামী ২৮ জানুয়ারি। এখনও আমার পুরো প্যানেল চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমার সঙ্গে সেক্রেটারি পদে লড়ছেন নিপুণ। আমি ওর সম্পর্কে যতদূর জানি, সে নীরবে-নিভৃতে আমাদের সিনেমার মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছে। ওর এই গুণটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। ওর মানসিকতার সঙ্গে আমার মানসিকতা মিলে যাওয়ার কারণেই একসঙ্গে নির্বাচন করছি। আমাদের উভয়ের মানসিকতা হচ্ছে মানুষের উপকার করা।
রিয়াজ, ফেরদৌসের মতো শিল্পীরা কি থাকছেন?
হ্যাঁ। ওদের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই কথা হচ্ছে। ওরা আমাদের সঙ্গে আছেন। আরও অনেকেই থাকছেন, সবার নাম শিগগিরই জানানো হবে। আমার একটাই জীবন। এই জীবনে যেন আফসোস না থাকে, আমাকে যে অঙ্গন আজকের ইলিয়াস কাঞ্চন বানিয়েছে, তার জন্য কিছু করলাম না। এই আফসোস যেন আমার না করতে হয়। তাই চেষ্টা করে দেখি, আগামী দুই বছর চলচ্চিত্রের জন্য কিছু করতে পারি কিনা বা কিছু করা যায় কিনা।
আপনারা নেতৃত্বে এলে দুই বছরে চলচ্চিত্রের সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন?
কী হবে জানি না, কিন্তু আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা তো করতে পারি। চেষ্টা না করলে কোনোদিনই কিছু হয় না। সৃষ্টিকর্তা বলেছেন, তোমরা যতক্ষণ না তোমাদের অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা না করবে, ততক্ষণ আমিও তোমাদের অবস্থার পরিবর্তন করব না। তাই তো আমরা সবাই মিলে চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। এখন এফডিসিতে সিনেমাই নির্মিত হচ্ছে না। এফডিসিতে শিল্পীদের কাজের পরিবেশ নেই। এই পরিবেশটা ফিরিয়ে আনা বেশি প্রয়োজন। আমরা শিল্পীরা সরকারের অনুদান নিয়ে ঘরে বসে খেতে চাই না। কাজ করে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই। কারণ, আমরা চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। এ ভালোবাসার জায়গাটা সুন্দর থাকুক। এ জন্য সবাই মিলে কাজ করা দরকার। সবার মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেটা কমিয়ে এনে সকলে মিলে যেন এখানে কাজ করতে পারি- এটাই এখন আমার মূল লক্ষ্য। আমার কারও প্রতি রেষারেষি নেই। আমরা শিল্পীরা সবাই ভাই ভাই। চলচ্চিত্রের সব সমস্যা সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাই সবাই মিলেই কাজ করতে চাই। আমার বিশ্বাস, সবাই আমার সঙ্গে থাকবেন।
এরই মধ্যে নতুন সিনেমায় কাজ করেছেন?
করেছি। দীর্ঘদিন পর চিত্রনায়িকা রোজিনার পরিচলনায় 'ফিরে দেখা' সিনেমার কাজ শেষ করেছি। পাশাপাশি আরও কয়েকটি সিনেমায় অভিনয়ের কথা চলছে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
মন্তব্য করুন