ময়মনসিংহ নগরীতে ছেলের প্রেমের অপরাধের মা লাইলী আক্তারকে (৩৮) পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় প্রেমিকার চাচা-চাচিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর বুধবার তাদের বিকেলে আদালেত তোলা হলে ২ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

হত্যায় জড়িত অন্য ৬ আসামিকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে খোঁজ মেলেনি প্রেমিক যুগলের। গ্রেপ্তার হলেন নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চরঈশ্বরদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী আছমা আক্তার। তারা সম্পর্কে পলাতক স্কুলছাত্রীর চাচা-চাচি।

পুলিশ জানায়, নগরীর চরঈশ্বরদিয়া পূর্বপাড়ার আবদুর রশিদ একটি বাসে সহকারীর কাজ করেন। তার ছেলে সিরাজুল ইসলাম (২০) এসএসসি পাস করে একটি পার্সের দোকানে কাজ করেন।

প্রতিবেশী উচ্চ মাধ্যমিকপড়ুয়া ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় সিরাজুলের। ওই ছাত্রীর বাড়ি একই এলাকায়। প্রেমের সম্পর্কের কারণে ১৯ জুন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সিরাজুল ও তার প্রেমিকা। ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর পরিবার থানায় কোনো জিডি করেনি।

প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলে পলাতক থাকায় মঙ্গলবার প্রেমিক সিরাজুলের বাড়িতে যান কয়েকজন নারী। ওই প্রেমিকার মা ও দুই চাচি তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে সিরাজুলের মা লাইলী আক্তারের ওপর। একপর্যায়ে লাইলীকে মারধর শুরু করেন ওই তিন নারী।

পরে লাইলীর হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে পালিয়ে যান প্রেমিকার মা ও দুই চাচি। আগুন নিভিয়ে লাইলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় লাইলীর স্বামী আবদুর রশিদ বাদী হয়ে তিন নারী, ওই ছাত্রীর বাবা, তার ভাই কামাল মিয়া, জাহাঙ্গীর আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি মনিরা বেগম অনু বলেন, ছেলে-মেয়ে প্রেম করবে তার চাপ বাবা-মার ওপর কেন আসবে? নারীটির সঙ্গে যা ঘটেছে, তা চরম অন্যায়। এ ধরনার ঘটনার যেন পুনরারাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য জড়িতদের শাস্তি চান তিনি।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।