যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলাকে ব্যক্তিমালিকানা কোম্পানিতে রূপান্তরিত করার কথা বলে ২০১৮ সালের আগস্টে টুইট করেছিলেন টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। এ নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকো শহরের আদালতে টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষে মামলা হয়। ওই মামলার রায়ে শুক্রবার খালাস পেয়েছেন মাস্ক। খবর: সিএনএন, বিবিসি’র।

সে সময় ইলন মাস্ক টুইট মোতাবেক আগাতে চাইলে ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিনে নিতে হতো। তবে শেষমেষ এমন ঘটনা ঘটাননি বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ব্যবসায়ী।

রায় ঘোষণার সময় ইলন মাস্ক আদালতে ছিলেন না। তবে শুক্রবার সকালে শুনানি চলাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

ইলন মাস্ক এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কয়েক বিলিয়ন ডলার জরিমানার আদেশ দিতেন বিচারকেরা। ৯ জন বিচারক প্রায় দুই ঘণ্টা সময় নিয়ে শুক্রবার দুপুরে এ রায়ে পৌঁছান। ইলন মাস্ক অবশ্য সান ফ্রান্সিসকো আদালত থেকে মামলা টেক্সাসে স্থানান্তরের কথা বলে আসছিলেন। টেসলা কোম্পানির প্রধান কার্যালয় যেহেতু টেক্সাসে। তবে সান ফ্রান্সিসকো বিচারকদের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন মাস্ক। তবে তাঁর প্রতিপক্ষ রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে।

২০১৮ সালের ৭ আগস্ট এক টুইটে ইলন মাস্ক লেখেন, ‘৪২০ ডলারে টেসলা ব্যক্তিমালিকানায় নিয়ে আসব ভাবছি। বিনিয়োগ পাওয়া গেছে।’

‘বিনিয়োগকারীদের সমর্থন নিশ্চিত হয়েছে’ বলে সেদিনই পরে আবার টুইট করেন তিনি। শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, এই টুইটের মাধ্যমে ইলন মাস্ক মিথ্যা বলেছেন। সে সময় মাস্কের ওই টুইটের কারণে শেয়ারের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। যদিও পরে কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেলে শেয়ারের দাম নেমে আসে।

তখন শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষ থেকে নিয়োগ করা একজন অর্থনীতিবিদের মতে, টুইটের ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের ১২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত লোকসান হয়েছে।

এসব টুইটের জন্য ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মিথ্যা বলার অভিযোগ এনে মামলা করে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। ওই মামলায় ২০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা ধার্য করা হয় এবং মাস্ক টেসলার বোর্ড চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হন। তবে প্রধান নির্বাহী হিসেবে বহাল থাকছেন তিনি। আর বিচার চলাকালে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, সৌদি আরবের স্বার্বভৌম তহবিল থেকে অর্থ পাওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন বলে ভেবেছিলেন তিনি।

প্রায় ৯ ঘণ্টা আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ব্যবসায়ী ইলন মাস্ককে। তখন একবার তিনি বলেন, ‘আমি শুধু টুইট করলাম বলেই যে মানুষজনকে তা বিশ্বাস করে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এর কোনো মানে হয় না।’