- প্রযুক্তি
- স্মার্টফোন ক্যামেরায় যত ফিচার
স্মার্টফোন ক্যামেরায় যত ফিচার

প্রতীকী ছবি
ছবি ও ভিডিও ধারণের কথা মাথায় রেখে স্মার্টফোন কেনার আগে গ্রাহকরা ক্যামেরার বিভিন্ন ফিচারের বিষয়টি মাথায় রাখেন। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তাঁরা ভালো মানের ক্যামেরা বলতেই 'মেগাপিক্সেল' বোঝেন; মেগাপিক্সেল ছাড়া ক্যামেরার অন্যান্য স্পেসিফিকেশন নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না। কিন্তু মেগাপিক্সেল ছাড়াও ক্যামেরার অ্যাপারচার, ফ্ল্যাশ, আইএসও, ডেপথ অব ফিল্ড ভালো মানের ছবি ও ভিডিও ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মেগাপিক্সেল
মেগাপিক্সেলের মূলে রয়েছে পিক্সেল। পিক্সেল হলো ডট বা বিন্দু। আর মেগাপিক্সেল হলো মিলিয়ন ডট বা বিন্দু। এই রকম মিলিয়ন পিক্সেল মিলে তৈরি করে একটি ছবি। ২০ মেগাপিক্সেলের একটা ছবিতে থাকে ২০ মিলিয়ন পিক্সেল। আর ৬৪ মেগাপিক্সেল ছবিতে থাকে ৬৪ মিলিয়ন পিক্সেল। ক্যামেরায় যত বেশি মেগাপিক্সেল থাকবে, ততই এর ইমেজ সেন্সরের পিক্সেল সংখ্যা বেশি হবে। ১ মেগাপিক্সেল ক্যামেরায় সাধারণত ১০ লাখ পিক্সেল থাকে। ফোনের ক্যামেরায় মেগাপিক্সেল যত বেশি হবে, ছবির ফাইলের আকার তত বাড়বে, মেমোরিও দখল করবে বেশি। মেগাপিক্সেলকে ছবির রেজুলেশনও বলা যায়। তবে বেশি রেজুলেশন হলেই যে ছবির মান ভালো হবে, এমন কোনো কথা নেই। পিক্সেলের সংখ্যার চেয়ে পিক্সেলের মানের ওপরই নির্ভর করে ভালো ছবি।
অ্যাপারচার
মেগাপিক্সেলের পরই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় ক্যামেরার যে ফিচার, তা হলো অ্যাপারচার। অ্যাপারচার হলো ফটোগ্রাফির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপক। অ্যাপারচার মূলত লেন্সের হোল বা ছিদ্র। ক্যামেরায় থাকা ছিদ্রটি যত খুলবে, তত বেশি আলো লেন্স ও ক্যামেরা সেন্সরের মধ্যে প্রবেশ করবে। সংখ্যায় একে প্রকাশ করা হয় এফ/১.৫ বা এফ/২.৫ হিসেবে। অ্যাপারচার কম থাকলে ছিদ্রটি বেশি পরিমাণে খুলবে। একটি লেন্সের অ্যাপারচার যত কম হবে, লেন্সটি তত বেশি ওপেন হবে এবং তত বেশি আলো সংগ্রহ করতে পারবে। ক্যামেরা লেন্সের অ্যাপারচার যত কম হবে, ক্যামেরাটি তত ভালো মানের হবে। তত ভালো মানের ছবি তুলতে পারবে।
ডেপথ অব ফিল্ড
ডেপথ অব ফিল্ড এমন একটি বিষয়, যার ওপর ছবির সৌন্দর্য নির্ভর করে। একটি ছবির কতদূর পর্যন্ত ফোকাস করা হবে, তা ডেপথ অব ফিল্ডের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। ডেপথ অব ফিল্ড বিষয়টি পরিমাপ করার ব্যবস্থা নেই। লেন্সের ফোকাল লেন্থ প্রভাব ফেলে ডেপথ অব ফিল্ডের ওপর। ফোকাল লেন্থ যত কম হবে, ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি হবে। ক্যামেরা থেকে বিষয়ের দূরত্ব যত বেশি, ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি। পোর্ট্রেট ছবি তোলার সময় শুধু ছবির বিষয়ের দিকেই ফোকাস করা হয়। কিন্তু খোলা মাঠের সৌন্দর্য ধারণ করতে গেলে গভীর ডেপথ অব ফিল্ডের প্রয়োজন হয়। কাজেই ভালো ছবি ওঠানোর জন্য ডেপথ অব ফিল্ড বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দিন। একই ছবি ভিন্ন ভিন্ন সেটিংয়ে উঠিয়ে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করুন।
উচ্চ গতিশীল পরিসীমা
স্মার্টফোন ক্যামেরায় উচ্চ গতিশীল পরিসীমা বা হাই ডায়নামিক রেঞ্জ আপনাকে মানসম্পন্ন ছবি ক্যাপচার করতে দেয়। সমুদ্র, আকাশ অথবা গতিশীল কোনো বস্তুর ছবি তোলার সময় সাধারণত এটি ব্যবহূত হয়। রাতের ফটোগ্রাফি বা অন্ধকার আলোকিত এলাকায় ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করা হয় হাই ডায়নামিক রেঞ্জ ফিচারটি।
অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন
ফটোগ্রাফির সময় হাত সামান্য নড়লেও ছবি নষ্ট হয়ে যায়। অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন (ওআইএস) এমন এক প্রযুক্তি, যা হাত নড়লেও স্বচ্ছ এবং পরিস্কার ছবি ও ভিডিও তুলতে সাহায্য করে। ওআইএস ছবিকে ঘোলা হতে দেয় না। এই প্রযুক্তি দুটি উপাদান ব্যবহার করে। একটি হলো লেন্স এলিমেন্ট, অন্যটি হলো জেরোস্কপ সেন্সর। রাতে আলো কম থাকায় ক্যাপচার হতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। অথচ এই বেশি সময়ের মধ্যে হাত নড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে ওআইএস ফিচার মুভমেন্ট অ্যাডজাস্ট করে সুন্দর ছবি তুলতে সাহায্য করে।
অটোফোকাস
অটোফোকাস স্মার্টফোন ক্যামেরায় সবচেয়ে সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলোর অন্যতম। স্মার্টফোন ক্যামেরায় তিন ধরনের অটোফোকাস রয়েছে।
কনট্রাস্ট শনাক্তকরণ অটোফোকাস: এটি স্থির ফটোগ্রাফির জন্য সর্বোত্তম এবং একটি ছবিতে কতটা আলো এবং অন্ধকার রয়েছে, সেদিকে মনোযোগ দেয়, যাতে ছায়ার দিকগুলো তীক্ষষ্টভাবে ধারণ করা যায়।
লেজার অটোফোকাস: এ ধরনের অটোফোকাস দ্রুত স্ন্যাপ করার জন্য সর্বোত্তম। এটি টার্গেট এবং ক্যামেরার মধ্যে দূরত্ব গণনা করতে ইনফ্রারেড লেজার ব্যবহার করে, যা তাৎক্ষণিকাবে একটি ছবির জন্য ক্যামেরাকে ফোকাস করে।
চেহারা শনাক্তকরণ অটোফোকাস: এটি ক্রমাগত একটি শট পুনরায় ফোকাস করবে, যতক্ষণ না আপনি ভালো মানের ছবি ধারণ করতে পারেন।
ফ্ল্যাশ
ছবির অন্ধকার ভাব কাটাতেই স্বল্প আলোতে ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা হয়। ফোনে সাধারণত দুই ধরনের ফ্ল্যাশ থাকে- এলইডি ফ্ল্যাশ ও ট্রু টোন এলইডি। ট্রু টোন ফ্ল্যাশ হলো সবচেয়ে ভালো মানের ফ্ল্যাশ প্রযুক্তি।
মন্তব্য করুন