ফেসবুক লাইভে এসে গলায় ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রঞ্জু আহমেদ (২২) নামের এক স্কুলশিক্ষার্থী। স্কুল পড়ুয়া এক মেয়ের প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিজের শোয়ার ঘরে রশিতে ঝুলে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে। 

রোববার দিবাগত মধ্যরাতে নাটোরের গুরুদাসপুরের মশিন্দা ইউনিয়নের বিলবিয়াসপুর গ্রামে আত্মহত্যার এই ঘটনা ঘটে। রঞ্জু একই এলাকার হরফ আলী ছেলে। 

পরিবারের লোকজন টের পেয়ে দরজা ভেঙে রঞ্জুর লাশ উদ্ধার করে। আজ সোমবার সকালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার দাফন-কাফন করে পরিবার।

ইংরেজিতে লেখা ‘রঞ্জু আহমেদ’ নামের ফেসবুক আইডির লাইভে দেখা যায়, রঞ্জু লাইভে এসে গলায় রশি পেঁচিয়ে ঘরের চালার বাঁশের সঙ্গে ঝুলে যান। রশিতে ঝোলার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হাত-পা নাড়িয়ে তিনি বাঁচার চেষ্টা করেন। এরপর ৩-৪ মিনিটের মাথায় তিনি মারা যান। এ সময় তার ফেসবুক বন্ধুরা লাইভের কমেন্টে আত্মহত্যা না করার অনুরোধ জানান। 

আত্মহত্যার আগে রঞ্জু তার ফেসবুক আইডিতে পর পর কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। মৃত্যুর চারদিন আগে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, ছেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ ছিল না, তবে থেকে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ ছিল, তাও তুমি থাকলে না।

ছয়দিন আগের একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, দোয়া করি প্রিয় ভালোবাসার মানুষটাকে না পাওয়ার অসুখটা তোমার না হোক। 

এছাড়া মৃত্যুর আগে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, সবাই ভালো থেকো, আমিও ভালো থাকবো ওপারে। 

মৃত্যু হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে লেখেন, শেষ আয়োজন এবং শেষ ঠিকানা। কখন জানি মৃত্যু এসে বলবে, চলো এবার যাওয়া যাক, জিন্দা থাকলে নিন্দাতো হবেই, সাদা কাপড়ে জড়িয়ে গেলে ভালোবাসার মানুষের অভাব হয় না। সময় যখন থমকে যাবে, শেষ হবে সফর- বিদায় দেবে বন্ধু-স্বজন, স্বাগত জানাবে পরপার।

আরেকটি স্ট্যাটাসে লেখেন, সরি বাবা, কত কষ্ট দিয়েছি আপনাকে। হয়তো আমাকে নিয়ে আপনার অনেক স্বপ্ন ছিল।

রঞ্জুর চাচাতো ভাই সোহেল রানা বলেন, তুষি নামের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল। রঞ্জুকে বেশ কয়েকদিন ধরে উদাসীন মনে হচ্ছিল। কিন্তু কেউ বুঝতে পারেনি সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে। তবে রঞ্জুর পরিবার প্রেমের কারণে আত্মহত্যার ব্যাপারে কোনো মেয়েকে দায়ী করেনি।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে রঞ্জুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।