কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থানে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ চাকরি হারাতে পারে। সম্প্রতি এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে শীর্ষ এক মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রতিবেদনমতে, এআইর প্রভাবে বিভিন্ন খাতে পরিবর্তন আসবে, যেখানে প্রশাসনিক কাজের ৪৬ শতাংশ ও আইনি পেশার ৪৪ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় উপায়ে হতে পারে। তবে নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণভিত্তিক খাতে যথাক্রমে ৬ ও ৪ শতাংশ ভূমিকা রাখবে এআই। মানুষের চেয়ে অনেক কম খরচেই এসব কাজ করে দেবে এআই।

মূলত মাইক্রোসফটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি চ্যাটজিপিটি, গুগলের বার্ড এবং বাইদুর আনি বট উন্মোচনের পর এমন শঙ্কা প্রকাশ করল ব্যাংকটি। এর আগে ‘গোল্ডম্যান স্যাকস’ এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মোট কর্মশক্তির এক-চতুর্থাংশ চাকরির জায়গা নিতে পারে এআই। ‘এআই ইমেজ জেনারেটর’ নিয়ে কয়েকজন চিত্রশিল্পী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই টুল তাঁদের কর্মসংস্থানের ওপর আঘাত হিসেবে আসতে পারে।

সংবাদকর্মীদের জন্যও এ টুল হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। তবে এআইর উত্থানে নতুন চাকরির সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি উৎপাদনশীলতাও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাপিত জীবনের প্রথাগত পদ্ধতিকেই বদলে দিতে পারে এআই। এআইর ফলে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক ব্যয়ও বাড়তে পারে। মূলত মাইক্রোসফটের এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি এমন সব কাজে দক্ষতা দেখাচ্ছে, যা এর আগে হয়নি। চ্যাটজিপিটি বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা করতে পারে, গান লিখতে পারে, কবিতা লিখতে পারে, উপন্যাস লিখতে পারে এবং ছবি আঁকতে পারে। সৃজনশীল কাজে চ্যাটজিপিটির অভাবনীয় এ দক্ষতা এআই সম্পর্কে কল্পবিজ্ঞানকে বাস্তবে নামিয়ে এনেছে অনেকটা।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির এ দক্ষতাকে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছে বিবিসি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে বাড়তি সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি চাকরির বাজারে সুবিধা নিতে হলে নতুন পরিকল্পনা প্রয়োজন হবে। নিজস্ব জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে তুলতে হবে, যেন এআইনির্ভর বিভিন্ন সেবা পরিচালনায় তাঁরা যোগ্য হয়ে ওঠে। এ লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার।