মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশনে মানুষ কিংবা জীবজন্তু বা উদ্ভিদের ক্ষতি হয় না। এ ছাড়া মোবাইল টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে যেসব আন্তর্জাতিক নীতিমালা মেনে চলা হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির পর্যবেক্ষণে দেশের মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশনের পরিমাণ সহনীয় মাত্রার নিচে পাওয়া গেছে। তাই মোবাইল টাওয়ার নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টারস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত এক গোলটেবিলে বক্তারা এ কথা বলেন।

বক্তরা বলেন, ‘রেডিয়েশন মূলত দুই প্রকারের হয়- আয়োনইজড এবং নন আয়োনাইজড। অতি বেগুণি রশ্মি, গামা রশ্মি, এক্স রে ইত্যাদি হল আয়োনাইজড যা মানব দেহের ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু মোবাইল ফোন, মোবাইল টাওয়ার, রাউটার এসব হলো নন আয়োনাইজড। এতে ক্ষতিকর কিছু নেই। বাড়িতে নিত্য ব্যবহার্য মোবাইল ফোন, রাউটার, মাইক্রোয়েভ ওভেনে যে পরিমাণ রেডিয়েশন হয় মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশেনও তেমন।’

অনুষ্ঠানে অপারেটর ও টাওয়ার কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানান, রাজধানীর অন্তত তিনশটিরও বেশি স্থানে মোবাইল সাইট স্থাপন করা যাচ্ছে না যেগুলো জরুরি। টাওয়ারের রেডিয়েশনজনিত ভীতি থেকে টাওয়ার স্থাপনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। মোবাইল সেবার মান উন্নয়নে টাওয়ার স্থঅপনের বাধা দূর করতে হবে। রেডিশন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠান মোবাইল নেটওয়ার্কে জ্যামার, রিপিটার, বুস্টার ব্যভহার করছে। এগুলো অবৈধ। এসবের কারণেও নেটওয়ার্কের ক্ষতি হচ্ছে। গ্রাহকেরা ঠিকমত সেবা পাচ্ছেন না। অপারেটরদের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা তরঙ্গ ব্যবহারে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে।’

অথচ এই কাল্পনিক ভীতির কারণে মানুষ মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বাধা প্রধান করছে। সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে ভবনে স্থাপিত টাওয়ার সরিয়ে নিতে হচ্ছে। তারা এ ব্যপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসির উপপরিচালক ড. সামসুজ্জোহা। সঞ্চালন করেন টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহেদী। আলোচনায় অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি এফেয়ারস অফিসার তাইমুর রহমান, রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম, গ্রামীণফোনের করপোরেট এফেয়ারস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত, এরিকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম, নকিয়া বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড আরিফ ইসলাম, হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল মার্কেটিং ম্যানেজার এস এম নাজমুল হাসান, ইডটকোর হেড অব রেগুলেটরি এফেয়ারস মাসুদা হোসেন, এমটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবঃ) প্রমুখ।