বগুড়ায় স্বয়ংক্রিয় চালকল স্থাপন করবে মেঘনা গ্রুপ

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তানভীর ফুড লিমিটেডকে (টিএফএল) ৩৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আইএফসি। এ অর্থায়ন টিএফএলকে বগুড়া অঞ্চলে দৈনিক ১ হাজার মেট্রিক টন চাল প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি অত্যাধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় চালের মিল স্থাপনে সহায়তা করবে, যার মাধ্যমে ২০২৭ সালের মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার টন গুণগত মানের প্যাকেটজাত চাল উৎপাদিত হবে।

আজ সোমবার আইএফসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তানভীর ফুডের দৈনিক ৮০ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি রাইস ব্র্যান অয়েল কারখানা এবং তাপ ও বিদ্যুতের জন্য একটি হাস্ক-ভিত্তিক সহ-উৎপাদন কারখানা স্থাপনেও আইএফসির অর্থায়ন সহায়ক হবে, যা জলবায়ু অভিযোজনে এবং উৎপাদন সময়কালীন জ্বালানি খরচের ওঠানামার পরিস্থিতি সামাল দিতে অবদান রাখবে।

আইএফসির গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি প্ল্যাটফর্মের (জিএফএসপি) আওতায় এটি প্রথম বিনিয়োগ। একটি অধিকতর টেকসই বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে তুলতে উৎপাদন পুনরুদ্ধার এবং উন্নতির মাধ্যমে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট সামাল দিতে ৬ বিলিয়ন ডলারের এই বৈশ্বিক অর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে।

এমজিআইর পরিচালক তাহমিনা বিনতে মোস্তফা বলেন, এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে চালের প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সরবরাহ কার্যক্রম বাড়াতে আমাদের সহায়তা করবে, যে অঞ্চলে বৃহৎ সংখ্যক ক্ষুদ্র কৃষক ঐতিহ্যগতভাবে তাদের জীবিকার জন্য চাল উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল।

তিনি আরও বলেন, মানুষের আয় বৃদ্ধি এবং পছন্দের পরিবর্তনের কারণে প্যাকেটজাত চালের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে প্রচলিত হাস্কিং মিলের পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয় মিলে স্থানান্তরের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের চাল উৎপাদন খাতের আধুনিকায়নে অবদান রাখবো, যা চালের গুনগত মান এবং প্যাকেটজাত চাল সংরক্ষণ করে রাখার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মুখ্য।

বাংলাদেশ এশিয়ার তৃতীয় চাল উৎপাদনকারী দেশ। চাল এদেশের প্রধান খাদ্য শস্য এবং শর্করার মূল উৎস। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় দেশ খাদ্য নিরাপত্তাজনিত তীব্র ঝুঁকিতে পড়েছে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আইএফসির আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো পুলিতি বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশে খাদ্য নিরাপত্তা বলতে চালের নিরাপত্তা বুঝায়। অত্যাধুনিক একটি রাইস মিল স্থাপনের মাধ্যমে এই প্রকল্প শত শত মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের কাছে আগের তুলনায় বেশি টাকা যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে এই রাইস মিল প্রকল্প এবং পাইপলাইনে থাকা একই ধরণের আরো প্রকল্প বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ বাজারকে মূল্য এবং সরবরাহজনিত অভিঘাত থেকে সুরক্ষা দিতে এবং ভোক্তা ও কৃষকের সুবিধার্থে অধিকতর সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়তা করবে।