প্রায় ১০ মাস টানা লড়াইয়ের পর অবশেষে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুত থেকে নিজেদের যোদ্ধা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার। এর পরিবর্তে গোটা শহর তুলে দেওয়া হচ্ছে রুশ সেনাদের হাতে। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধে রুশ বাহিনী শহরটিতে কোনো ধরনের সংকটে পড়লে ফের মাঠে নামার ঘোষণাও দিয়েছে বাহিনীটি।

বৃহস্পতিবার ভিডিও বার্তায় ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন এসব কথা জানান। শহরটিতে টানা লড়াইয়ে তাঁর ২০ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলেও স্বীকার করেন প্রিগোজিন। তবে এই প্রত্যাহারকে রাশিয়ার শক্তি বৃদ্ধির কৌশল বলছে ইউক্রেন। খবর রয়টার্স ও আলজাজিরার

ওয়াগনার প্রধান বলেন, ‘বাখমুত থেকে ইউনিটগুলো প্রত্যাহারের করে আমরা আমাদের অবস্থান রুশ সামরিক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করছি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগামী ১ জুন পর্যন্ত চলবে এই কার্যক্রম। অধিকাংশ ওয়াগনার ইউনিট এখন পেছনের দিকে পুনঃস্থাপন করা হবে।’

টেলিগ্রামে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে প্রিগোজিনকে যুদ্ধের পোশাক পরা এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত একটি আবাসিক ভবনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ লড়াইয়ের পর গত শনিবার বাখমুত দখলের ঘোষণা দেয় ওয়াগনার।
বাখমুতে উপকণ্ঠে রুশ সেনাদের সঙ্গে ওয়াগনার বাহিনী প্রতিস্থাপনের কথা জানিয়েছে ইউক্রেনও। তবে এটি মস্কোর শক্তি বৃদ্ধির জন্য করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। টেলিগ্রামে দেশটির উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেন, ‘শত্রুরা কামানের গোলা দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রাকে থামানোর চেষ্টা করছে। এখন শত্রু শক্তি বৃদ্ধির জন্য বাড়তি ইউনিট টানছে। গ্রুপের যোদ্ধারা শহরের ভেতরেই অবস্থান করছে।’

যুদ্ধের সফলতা তুলে ধরতে ইউক্রেনকে বাধ্য করছে পশ্চিমারা– এমন দাবি করেছে মস্কো। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, পশ্চিমারা কিয়েভকে অস্ত্র দিয়ে উদ্বুদ্ধ করে ইউক্রেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্য দেখাতে বাধ্য করায় সংঘাত ক্রমেই বাড়ছে। চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পূর্ব ইউরোপীয় অঞ্চলে।    

এদিকে, বেলগরোদ সীমান্তে আরও হামলার হুমকি দিয়েছে পুতিনবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী। ইউক্রেনে অবস্থান নেওয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী একটি বাহিনীর কমান্ডারের দায়িত্বে আছেন ডেনিস কাপুস্টিন। তিনি নিজেকে রাশিয়ান ভলান্টিয়ার কর্পসের (আরভিসি) কমান্ডার বলেও দাবি করেন। শিগগিরই আবারও সীমান্তে অনুপ্রবেশ করা হবে বলে জানান তিনি।

ইউক্রেনে কাজ করা অপর রুশ সশস্ত্র গ্রুপটি হলো ফ্রিডম অব রাশিয়া লিজিয়ন। ডানপন্থি এই জাতীয়তাবাদী গ্রুপ দুটি গত সোম ও মঙ্গলবারের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ইউক্রেনের ২৮টি জাহাজ পিভডেনি বন্দরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। কৃষ্ণসাগরের শস্য চুক্তিতে বাধা দেওয়া বন্ধ করতে হবে রাশিয়াকে। কারণ, এটি জীবন রক্ষাকারী উদ্যোগ।   এবার পাঁচ সুইডিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মাসে সুইডেন থেকে তাঁদের পাঁচ কূটনৈতিককে বহিষ্কারের জবাব এটি। গত বছর ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের পর থেকেই স্কটহোমের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে মস্কোর।

রাশিয়াকে নিজেদের তৈরি ড্রোন না দিতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন।