বাংলা বিভাগ পরীক্ষা, ভাইভা ও প্রেজেন্টেশনের সময় কানসহ মুখমণ্ডল খোলা রাখার নোটিস বাতিলের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার অভিযোগ এনে উপাচার্যের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল নারী শিক্ষার্থী। সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ সমাবেশ হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা এর আগে নোটিস বাতিলের দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন। উপাচার্য তাদের দাবির যৌক্তিকতা মেনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরীক্ষা ঘনিয়ে আসতেই তাদের বিশ্বাস ও ভরসা ভেঙে যায়।

বাংলা বিভাগ তার পূর্বের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেকে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

সমাবেশে এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৯ সালে যশোর বোর্ডে খ্রিস্টধর্মীয় নিয়ম মেনে রিকি হালদারের এককভাবে রাতের বেলা এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০২২ সালে কুষ্টিয়ায় একই ধর্মের আলবার্ট স্মিথ বালা রাতের বেলা পরীক্ষা দেন। ধর্মীয় বিষয় মেনে শিক্ষার সুবিধা থাকলেও আমাদের কেন এ সুবিধা দেওয়া হবে না, এই প্রশ্ন জানাই।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সংবিধানে মৌলিক অধিকারে প্রত্যেক ধর্মের বিষয়ে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩’র অধ্যাদেশের আর্টিকেল ৬ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত বিধান করা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশে পরিচয় শনাক্তকরণে নানা প্রযুক্তি রয়েছে। সেখানে ধর্মীয় পর্দার বিধান মানতে বাধা সৃষ্টি করা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আইনের পরিপন্থী। কারও মুখ খোলা রাখতে বাধ্য করে ধর্মীয় বিধানে অবাধ্য করা যাবে না।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরা এখনও প্রত্যাশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্রতি অব্যাহত এই অন্যায়ের সমাপ্তি টানতে উদ্যোগী হবে। ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ণ করার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট ঘটনাগুলোর তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। হেনস্থার শিকার শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন পরিবেশ পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সচেষ্ট হবে। তা না হলে তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দ্বারস্থ হবেন।

বিষয়টি জানতে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে বেশ কয়েকবার ফোন করা তাঁর হলে ব্যস্ত পাওয়া যায়।

/ওয়াইএ/