বাজেটে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বরাদ্দে গুরুত্বারোপ

রপ্তানিযোগ্য সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে বাজেট বরাদ্দ আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী ও আলোচকরা
আইসিটি ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪ | ১৮:৪৫ | আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ | ১৯:২৯
বাজেটে দেশেই সেমিকন্ডাক্টর শিল্পোন্নয়নে ৫০ কোটি ডলার বরাদ্দ রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেছেন।
স্মার্টআপদের জন্য যেভাবে বাজেটে শতকোটি টাকা রাখা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে দেশি-বিদেশি কেউ যদি আসে, বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহী হয়, সঙ্গে নিজেরাও যেন পাঁচশ মিলিয়ন ডলার যোগ করতে পারি। ম্যাচিং ফান্ড দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
রাজধানীর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-অডিটরিয়ামে ‘আনলেশিং দ্য প্রোটেনশিয়াল অব সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের সেমিনারে প্রধান অতিথি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, উল্কাসেমি, নিউরাল সেমিকন্ডাক্টর লিমিটেড, প্রাইম সিলিকন ও ডিএসআই চিপ উৎপাদন ও নকশা করে বছরে পাঁচ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। কিন্তু এখনও দেশে চিপ ফ্রেব্রিকেশনের কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। চিপ অ্যাসেম্বিলিং, টেস্টিং ও প্যাকেজিংয়ের কোনো সুযোগ এখানে নেই।
সারাবিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বাজার বিদ্যমান, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। গত ১৫ বছরে দেশে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক ইকোসিস্টেম তৈরি হয়েছে। ফাউন্ডেশনের ওপর ভিত্তি করে আগামী ১৭ বছরে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে; সেখানে দেশের মেধাবী প্রকৌশলীরা তাদের কাজের মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ চিপ রপ্তানি করে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা সম্ভব।
দেশে চিপ ডিজাইনিং ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করার লক্ষ্যে এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রকল্পের অধীনে ফ্রন্টিয়ার (অগ্রসর) প্রযুক্তিতে লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীকে সুদক্ষ করে গড়ে তোলা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটসহ দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের শিক্ষিত তরুণদের মাইক্রো চিপস ডিজাইনিং, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডেটা অ্যানালেটিক্স, ক্লাউড কম্পিটিং প্রযুক্তিতে সুদক্ষ করে তোলার জন্য হায়ার অ্যান্ড ট্রেনিং প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
উদ্ভাবন ও গবেষণার বিকাশে সরকার দেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০টি রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই শেষে গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রম চলমান। এমআইটির সঙ্গে আইসিটি ডিভিশনের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ১ কোটি ডলার খরচ করে বুয়েটের ক্যাম্পাসে ন্যানো ল্যাব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
সাহসী ও মেধাবী উদ্যোক্তার প্রয়োজন এখন দেশে। নতুন কোন স্টার্টআপ ডিজাইনিং ফার্মকে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে ইক্যুইটি ইনভেস্টে ১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার সক্ষমতা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০টির মতো কোম্পানিতে ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও একশ প্রতিষ্ঠানে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
সভায় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আশরাফ আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বুয়েটের ন্যানোমেটেরিয়ালস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম এ হাসিব, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরউল্লাহ।