
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন
কর্মশালার বিষয়ে জানতে চাই ফোরসির উদ্যোক্তাদের কাছে- লেখালেখি কর্মশালা করে কী হয়? তারা জানান, যাদের লেখালেখির হাত আছে, লেখালেখির মন ও মনন আছে, যারা লিখতে চান- তাদের জন্য কর্মশালা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। তার ওপর সাধারণ লেখা আর শিশুদের জন্য লেখা এক কথা নয়। সাধারণের গল্প আর শিশুতোষ গল্প দুই-ই ভিন্ন। উপস্থাপনার ঢং, শব্দ চয়ন, গল্পের কাঠামো, বাক্যের আকার-আকৃতি ইত্যাদি ভিন্ন। এসব বিষয় সামনে রেখেই এ কর্মশালা।
সত্যিই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী অনেকেই বলেছেন, তারা এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। যেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষক ও সেভ দ্য চিলড্রেনের রিড প্রজেক্টের সাবেক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার ধর ও শিশুসাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ। প্রারম্ভিক পর্যায়ের শিশু কারা, কোন ফরম্যাটে তাদের জন্য গল্প লিখতে হবে, গল্পে কী কী থাকতে হবে ইত্যাদি হাতে-কলমে শেখানো হয় কর্মশালায়। ছোটদের জন্য অল্প শব্দে, ছোট বাক্যে কীভাবে গল্প সাজাতে হবে, গল্পে কীভাবে সমস্যা তৈরি হয়, তার সমাধানই বা কী প্রভৃতি বিষয় আলোচনা হয়। কয়েকজন অংশগ্রহণকারী বলেছেন, তারা নতুন অনেক কিছুই শিখেছেন। যেগুলো তাদের আরও আগে জানা উচিত ছিল।
ফোরসির এ উদ্যোগের ব্যাপারে সংগঠনটির উদ্যোক্তাদের একজন মাহফুজুর রহমান মানিক বলেছিলেন, কর্মশালাটি একেবারে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার থেকে বিশেষভাবে বললে ফেসবুকের মাধ্যমেই প্রচার করেছি। তাতে সবাই সাড়া দিয়েছেন এবং ফি দিয়েই সবাই অংশ নিয়েছেন।
ফোরসির কর্মশালায় শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়ূয়া, রহিম শাহ ও শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন উপস্থিত ছিলেন। তবে মধ্যমণি ছিলেন শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। যার হাত থেকে সবাই কাঙ্ক্ষিত সার্টিফিকেট গ্রহণ করে। বক্তব্যে তিনি বলেন, শিশুদের সুকুমারবৃত্তি জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব লেখকদের। শিশুসাহিত্যে আমাদের লেখকদের অবদান অসামান্য। আমরা বড় হয়েছি শিশুসাহিত্যের স্বর্ণযুগে। এখনও অনেক ভালো শিশুসাহিত্য হচ্ছে। সামনে আছে আরও অবারিত সুযোগ। আজ যারা শিশুদের কথা ভাবেন, শিশুদের জন্য লেখেন, তাদের আরও ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ভাবতে হবে নির্লোভভাবে। সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে সেলিনা হোসেন শিশুদের জন্য লেখালেখি নিয়ে এ ধরনের কর্মশালার আয়োজন করায় চাইল্ড সেন্ট্রিক ক্রিয়েটিভ সেন্টার ফোরসিকে ধন্যবাদ দিতেও ভোলেননি।
মিলন মেলা যখন ভাঙে সবার চোখেমুখে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি দেখা যায়। কর্মশালায় অংশ নিতে সুদূর সিলেট, বগুড়া, কুমিল্লা, মুক্তাগাছা, গাজীপুর থেকে যারা এসেছেন সবার প্রতিক্রিয়া- কষ্ট তাদের সার্থক হয়েছে।
মন্তব্য করুন