প্রকাশ: ০৮ মে ২০১৮
আফতাব চৌধুরী
রেড ক্রস, রেড ক্রিসেন্ট ও রেড ক্রিস্টাল জাতি, উপজাতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, শ্রেণি অথবা রাজনৈতিক বিশ্বাসে কোনো প্রকার বৈষম্যের সৃষ্টি করে না। একমাত্র প্রয়োজনের তাগিদে ব্যক্তির যন্ত্রণা দূর করা এবং জরুরি অবস্থায় দুর্দশাগ্রস্তের সেবায় অগ্রাধিকার দানের প্রচেষ্টা চালায়। রেড ক্রস, রেড ক্রিসেন্ট ও রেড ক্রিস্টাল পক্ষপাতহীন হয়ে বিশ্ববাসীর সেবায় কাজ করে। রড ক্রস, রেড ক্রিসেন্ট ও রেড ক্রিস্টাল একটি নিঃস্বার্থ ও স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান- এর মধ্যে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই। এ সংস্থার সদস্যবৃন্দ স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে মহান মানবসেবার কাজে নিয়োজিত এবং এতে ব্যক্তিস্বার্থ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকতে পারে না। যে কোনো দেশে শুধু এটি রেড ক্রস, রেড ক্রিসেন্ট বা রেড ক্রিস্টাল প্রতিষ্ঠান নামে থাকতে পারে।
পৃথিবীব্যাপী এটি একটি পরিবারের মতো। ব্রিটিশ ভারতের অধীনে ইন্ডিয়া রেড ক্রস সোসাইটি গঠিত হয়েছিল। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার ফলে পাকিস্তানের ভৌগোলিক এলাকায় পূর্বের আইনের সামান্য রদবদল করে পাকিস্তান রেড ক্রস সোসাইটির অধীনে পূর্ব পাকিস্তান শাখা নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান রেড ক্রস সোসাইটি গঠিত হয়, যা বর্তমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডে পরিচালিত হতো। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পর পাকিস্তান রেড ক্রস সোসাইটির পূর্ব পাকিস্তান শাখা বাংলাদেশের জাতীয় সোসাইটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ২০ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সরকারের কাছে স্বীকৃতি লাভের জন্য আবেদন করে। ৪ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকারের এক আদেশের মাধ্যমে 'বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি' গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জেনেভা কনভেনশনের আওতায় চলে আসে। এর পর ৩১ মার্চ ১৯৭৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি 'বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি' আদেশ ১৯৭৩ (পিও ২৬) জারি করেন। এই আদেশবলে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি স্বীকৃতি লাভ করে। ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ সালে ২২তম আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের তেহরান সম্মেলনে বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮৮ সালের ৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির আদেশে সংবিধান সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটির নাম পরিবর্তিত হয়ে 'বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি' হয়।
পরিবেশকর্মী, বৃক্ষরোপণে পুরস্কারপ্রাপ্ত