প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
সমকাল প্রতিবেদক
তবে সরকারের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির কোর কমিটির সদস্য ও আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সমকালকে বলেন, মাঝেমধ্যে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা কমতে পারে। আবার হঠাৎ বাড়তেও পারে। বিশেষ করে ছুটির পর দিন কমে যাওয়ার একটি শঙ্কা থাকে। সুতরাং এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২৩৫ জন সুরক্ষা অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করেছেন। এর আগের দিন একই সময় পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৮ জন।
এদিকে ৭ এপ্রিল থেকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিলে ইমিউনিটি ভালো হয়। এ কারণে চার সপ্তাহের পরিবর্তে আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। একইসঙ্গে প্রথম ডোজের কার্যক্রমও চলবে। গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও পুনর্নিমাণ শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কিত সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা আসার বিষয়টি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় চালানে ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিল। এসেছে ২০ লাখ ডোজ। এখানে একটি ঘাটতি হয়ে গেল। এ বিষয়ে স্থানীয় ডিলার বেক্সিমকো ফার্মা ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপর চাপ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩০ লাখ টিকা দ্রুত সরবরাহ করতে তাদের বলা হয়েছে। আগামী মাসে বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছে। কত বাড়িয়ে দেবে, তা নিশ্চিত করার পর সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
কয়েকটি দেশ টিকার বিষয়ে যোগাযোগ করছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ভারত বায়োটেক ও চীনের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানও টিকার ট্রায়ালের জন্য আবেদন করেছে। এ ছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে চিঠিপত্র পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। যেসব টিকা তাপমাত্রার কারণে সংরক্ষণ করা কঠিন, সেগুলোর বিষয়ে আমাদের আগ্রহ কম। বিশেষ করে যেসব টিকা মাইনাস ২০ ও মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে, সেসব টিকা বাংলাদেশে সংরক্ষণ ও বিতরণ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এ কারণে আমাদের ওইসব টিকার প্রতি জোর দিতে হবে, যেগুলো অক্সফোর্ডের মতো দুই থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামীতে সহজলভ্যতার ওপরই টিকাদান কার্যক্রম নির্ভর করবে। যে হারে মানুষ নিবন্ধন করছে এবং টিকা নিচ্ছে, তা বজায় থাকবে একই হারে টিকা পাওয়া গেলে। সরকারিভাবে টিকার জোগান অব্যাহত রাখার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশে যেতে হলে ডাবল ডোজের টিকা এবং করোনামুক্ত সনদ নিয়ে যেতে হবে।
দেশের শিক্ষকরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবেন উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, শিক্ষকদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষকদের অধিকাংশের বয়স ৪০ বছরের ওপরে। সুতরাং তারা এমনিতেই টিকা পেয়ে যাবেন। এছাড়া বিমানের পাইলট, ক্রু ও বন্দরের সব কর্মীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের টিকাদানের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ১৮ বছরের নিচে যারা আছে, তাদের টিকা দেওয়া যাবে না। সুতরাং ১৮ বছরের ওপরের বয়সী যারা শিক্ষার্থী আছেন, তাদের টিকার ব্যবস্থা হবে।