- প্রথম পাতা
- অর্ধেক আসন খালি রেখে চলবে গণপরিবহন
প্রথম পাতা
অর্ধেক আসন খালি রেখে চলবে গণপরিবহন
বাসে ভাড়া বাড়ল ৬০%
আসন খালি রাখার বিষয়ে লঞ্চ মালিকদেরও সরকারি নির্দেশনার বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার থেকে বিআইডব্লিউটিএ স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে কঠোর মনিটরিং করবে। নির্দেশনা না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সংশ্নিষ্ট লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রোধে অর্ধেক আসন খালি রাখাসহ সড়ক, রেল ও নৌপথে চলাচলের ক্ষেত্রে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। গত সোমবার এ স্বাস্থ্যবিধি জারি করা হয়। ওই দিন বিআরটিএ কার্যালয়ে এক সভায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করেন পরিবহন মালিকরা। গতকাল মঙ্গলবার তা দুই সপ্তাহের জন্য অনুমোদন করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভাড়া আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।
করোনা প্রতিরোধে গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৬৭ দিন গণপরিবহন বন্ধ ছিল। ১ জুন থেকে অর্ধেক আসন খালি রাখাসহ ১১টি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে বাস চালু হয়। অভিযোগ ওঠে, মালিকরা ইচ্ছামতো যাত্রীও তুলেছেন আবার ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়াও নিয়েছেন। কোনো কোনো পরিবহন দ্বিগুণ, আড়াই গুণ ভাড়া নিয়েছে।
গত আগস্টে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর 'যত আসন তত যাত্রী' নীতিতে চলার অনুমতি পায় বাস। বর্ধিত ভাড়াও প্রত্যাহার করা হয়। তবে বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া নিষিদ্ধ ছিল। যাত্রার আগে ও পরে বাস জীবাণুমুক্ত, যাত্রী-চালকসহ সবার জন্য মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা ছিল। এসবের কিছুই মানা হচ্ছিল না। যাত্রীদের ভিড় নিয়েই বাস চলছিল। গতকাল ছিল সরকারি ছুটির দিন। সড়কে গাড়ির চাপ একেবারেই ছিল না। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাসে যাত্রী ছিল কম।
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টিকে অযৌক্তিক বলছেন যাত্রীরা। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, গত বছরও অর্ধেক আসন খালি রাখার শর্ত মানেননি বাস মালিকরা। তবে ৬০ ভাগের জায়গায় শতভাগ বাড়তি ভাড়া নিয়েছেন তারা। এবারও তাই হবে। করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রীদেরও আর্থিক অবস্থা খারাপ। তারা বাড়তি টাকা কোথা থেকে জোগান দেবেন?
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সমকালকে বলেছেন, গত বছরের ১ জুন থেকে যেভাবে গণপরিবহনে যাত্রী বহন করা হয়েছিল, বুধবার থেকে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস সেভাবেই চলবে। বাসের অর্ধেক আসন খালি থাকবে, ভাড়া বাড়বে ৬০ শতাংশ। গণপরিবহনে সবার মাস্ক পরা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, অর্ধেক আসন খালি রেখে নিয়মিত ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয়। তাই গত বছরের মতো ৬০ শতাংশ ভাড়া বেড়েছে। মালিক ও শ্রমিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে হবে।
৬৭ দিন বন্ধ থাকার পর গত বছরের ৩১ মে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছিল যাত্রীবাহী ট্রেন। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো চালু হলেও এখনও ৯২টি লোকাল ও মেইল এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থার মধ্যেই গতকাল রেলওয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক আসন খালি রাখা হবে।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাৎ আলী সমকালকে বলেছেন, মঙ্গলবার থেকেই ট্রেনের আসন সংখ্যার অর্ধেক ফাঁকা রেখে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে আগাম টিকিট কেনা যাত্রীরা যেতে পারবেন। কোনো ট্রেনে যদি ১০০ আসন থাকে, তাহলে ৫০টির টিকিট বিক্রি করা হবে। তবে সরকারি নির্দেশনা জারির আগে যদি এর বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে যায়, তাহলে সব যাত্রীই নেওয়া হবে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বাসের মতো ট্রেনেও যত আসন তত যাত্রী নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। বন্ধ রয়েছে 'স্ট্যান্ডিং টিকিট' বিক্রি। সরেজমিন দেখা গেছে, টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী তুলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন রেল পুলিশ ও কর্মচারীরা।
মন্তব্য করুন