শ্রমে মর্যাদা, ভিক্ষাবৃত্তিতে নয়
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মাওলানা শাহ্ আবদুস সাত্তার
ইসলাম শ্রম ও শ্রমিকের মর্যাদা প্রদানে উৎসাহিত করেছে। শ্রমিককে উচ্চমর্যাদা দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করেছে। যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করে, মহান রাব্বুল আলামিন তাদের ভালোবাসেন। আল্লাহর কাছে মনিব-চাকর, উঁচু-নীচু, গরিব ও আমির সবাই সমান, যার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। শ্রমিকদের মর্যাদা সম্পর্কে তিনি আরও বলেছেন, এমনও হতে পারে খাদেম তার মনিব অপেক্ষা উত্তম এবং এও বিচিত্র নয় যে, আল্লাহর দরবারে খাদেমের কর্মই অধিক পছন্দনীয় হবে। আমরা জানি, আমাদের পূর্ববর্তী সব নবী এবং নবী করিম (সা.) একজন শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন। অনেকদিন পর্যন্ত তিনি নিজের শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভের অংশীদার হিসেবে হজরত খাদিজার (রা.) ব্যবসায় খেটেছেন।
ইসলামে একজন শ্রমজীবীর জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনার কথা বলেছেন। ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় আমরা দেখি, একজন মজুরও রাষ্ট্রীয় কর্ণধার হতে পারে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) তার প্রকৃত উদাহরণ। তিনি মদিনার গভর্নর হয়েছিলেন।
শ্রমিকদের মজুরি ও মর্যাদা সম্পর্কে হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, আমি কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হবো, যে ব্যক্তি আমার নামে প্রতিশ্রুতি করেছে অথচ তা রক্ষা করেনি, যে ব্যক্তি স্বাধীন লোককে বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করেছে, যে ব্যক্তি স্বাধীন মজুরের দ্বারা সম্পূর্ণ কাজ করিয়ে তার মজুরি প্রদান করেনি। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি প্রদান করিও। তিনি আরও বলেছেন, তোমরা যা খাবে, দাস-দাসীদের তাই খাওয়াতে হবে। তোমরা যা পরবে, তাদেরও তাই পরতে দেবে। কোনো ধরনের তারতম্য করতে পারবে না। শ্রমিকদের মর্যাদা দেওয়ার আর একটি প্রমাণের ঘটনা আমরা দেখতে পাই হজরত ওমরের (রা.) জীবনে। তিনি বিশাল সাম্রাজ্যের অধিশ্বর বা খলিফা হয়েও নিজের শ্রমিককে উটের পিঠে চড়িয়ে তার মর্যাদা দিতে এতটুকু ভোলেননি।
ইসলাম সামাজিক আচার-ব্যবহারের ক্ষেত্রেও মালিক-শ্রমিকের ব্যবধান দূর করেছে। এমনকি নামগত পার্থক্যটুকুও দূর করে দিয়েছে। শ্রমিকদের মর্যাদাহানিকর কোনো শব্দ ব্যবহার পর্যন্ত ইসলাম বরদাশত করেনি। কোনো দাস শ্রমিককে দাস বলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আরবের প্রচলিত ভাষা ছিল মালিককে রাব্ব বা প্রতিপালক বলা। কিন্তু ইসলামে তা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে মালিককে কেউ রাব্ব বলতে পারবে না। কারণ তোমরা সবাই গোলাম। একমাত্র আল্লাহই সবার রাব্ব বা প্রতিপালক।
ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত গুণ এই যে, সে শুধু বড় বড় বুলি আউড়িয়ে বসে থাকেনি। সর্বহারাদের অবস্থা উন্নয়নে শুধু মায়াকান্নাই কাঁদেনি বরং কার্যকরভাবে সতর্কতার সঙ্গে তাদের অধিকার সংরক্ষণ করেছে। আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তি প্রচলিত। এসব ভিক্ষুক শ্রমের প্রতি বিমুখতার জন্য ভিক্ষা করে থাকে। তাদেরও কর্মজীবী ও শ্রমজীবী করে তুলতে হবে। ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তি পছন্দ করে না বরং প্রত্যেকের কাজের প্রতি, শ্রমের প্রতি, পারস্পরিক সহমর্মিতা তথা মর্যাদাবোধের পরিচয় দেয়। দেশের সার্বিক উন্নতির ক্ষেত্রে শ্রম ও শ্রমিকের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়।
সভাপতি, বাংলাদেশ সীরাত মিশন, ঢাকা
ইসলামে একজন শ্রমজীবীর জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনার কথা বলেছেন। ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় আমরা দেখি, একজন মজুরও রাষ্ট্রীয় কর্ণধার হতে পারে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) তার প্রকৃত উদাহরণ। তিনি মদিনার গভর্নর হয়েছিলেন।
শ্রমিকদের মজুরি ও মর্যাদা সম্পর্কে হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, আমি কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হবো, যে ব্যক্তি আমার নামে প্রতিশ্রুতি করেছে অথচ তা রক্ষা করেনি, যে ব্যক্তি স্বাধীন লোককে বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করেছে, যে ব্যক্তি স্বাধীন মজুরের দ্বারা সম্পূর্ণ কাজ করিয়ে তার মজুরি প্রদান করেনি। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি প্রদান করিও। তিনি আরও বলেছেন, তোমরা যা খাবে, দাস-দাসীদের তাই খাওয়াতে হবে। তোমরা যা পরবে, তাদেরও তাই পরতে দেবে। কোনো ধরনের তারতম্য করতে পারবে না। শ্রমিকদের মর্যাদা দেওয়ার আর একটি প্রমাণের ঘটনা আমরা দেখতে পাই হজরত ওমরের (রা.) জীবনে। তিনি বিশাল সাম্রাজ্যের অধিশ্বর বা খলিফা হয়েও নিজের শ্রমিককে উটের পিঠে চড়িয়ে তার মর্যাদা দিতে এতটুকু ভোলেননি।
ইসলাম সামাজিক আচার-ব্যবহারের ক্ষেত্রেও মালিক-শ্রমিকের ব্যবধান দূর করেছে। এমনকি নামগত পার্থক্যটুকুও দূর করে দিয়েছে। শ্রমিকদের মর্যাদাহানিকর কোনো শব্দ ব্যবহার পর্যন্ত ইসলাম বরদাশত করেনি। কোনো দাস শ্রমিককে দাস বলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আরবের প্রচলিত ভাষা ছিল মালিককে রাব্ব বা প্রতিপালক বলা। কিন্তু ইসলামে তা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে মালিককে কেউ রাব্ব বলতে পারবে না। কারণ তোমরা সবাই গোলাম। একমাত্র আল্লাহই সবার রাব্ব বা প্রতিপালক।
ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত গুণ এই যে, সে শুধু বড় বড় বুলি আউড়িয়ে বসে থাকেনি। সর্বহারাদের অবস্থা উন্নয়নে শুধু মায়াকান্নাই কাঁদেনি বরং কার্যকরভাবে সতর্কতার সঙ্গে তাদের অধিকার সংরক্ষণ করেছে। আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তি প্রচলিত। এসব ভিক্ষুক শ্রমের প্রতি বিমুখতার জন্য ভিক্ষা করে থাকে। তাদেরও কর্মজীবী ও শ্রমজীবী করে তুলতে হবে। ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তি পছন্দ করে না বরং প্রত্যেকের কাজের প্রতি, শ্রমের প্রতি, পারস্পরিক সহমর্মিতা তথা মর্যাদাবোধের পরিচয় দেয়। দেশের সার্বিক উন্নতির ক্ষেত্রে শ্রম ও শ্রমিকের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়।
সভাপতি, বাংলাদেশ সীরাত মিশন, ঢাকা