গাজীপুরে নিরাপদ আবাসন থেকে ১৭ জনের পলায়ন
১২ নারী কিশোরী আটক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
গাজীপুর প্রতিনিধি
জানা যায়, আসামিদের দীর্ঘদিন ধরে ওই আবাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নানা অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির কারণে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহনাজ আক্তার বলেন, প্রথমে তারা দোতলার কক্ষের জানালার গ্রিল কেটে ফেলে। পরে বিশেষ কৌশলে খাটের কাঠ দিয়ে ছাদের সঙ্গে সীমানা প্রাচীর পর্যন্ত সিঁড়ি তৈরি করে একে একে ১৭ জন পালিয়ে যায়। পরে আবাসন কেন্দ্রের লোকজন টের পেয়ে দু'জনকে ছাদ থেকে আটক করে। এরই ফাঁকে ১৭ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। জয়দেবপুর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ দ্রুত অভিযানে বের হয়। পরে আশপাশ এলাকা থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়। শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকা থেকে পুলিশ আরও ৮ জনকে আটক করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ৫ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আবাসন কেন্দ্রের সহকারী হোস্টেল সুপার পারভীন আক্তার বলেন, তারা ৩-৪ বছর ধরে এই কেন্দ্রে রয়েছে। তাদের বন্দিজীবন আর ভালো লাগছিল না। মুক্ত জীবনের স্বাদ নিতেই এই পথ বেছে নিয়েছিল। তিনি বলেন, এ আবাসন কেন্দ্রে কোনো রকম অব্যবস্থাপনা বা গাফিলতি নেই। শনিবার দুপুরে নিরাপদ হেফাজতিদের আবাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহনেওয়াজ দিলরুবা, জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি সমকালকে বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। বন্দি নারী ও কিশোরীরা কেন এভাবে পালিয়ে যায়, তার আসল কারণ তদন্ত কমিটি বের করে প্রতিবেদন জমা দেবে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা ইয়াসমিনকে।
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, শনিবার সকালে মির্জাপুর রেলস্টেশনের কাছ থেকে ওই আটজনকে উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন- রাইজু (২৬), রিনা (২০), সুরমা (২০), জিয়াসমিন (১৮), শাবানা (১৬), বৃষ্টি (১৬), তানিয়া ও লামিয়া। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা তারেক তালুকদার নামে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ।
তারেক সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা উপজেলার তিন নান্দিনা গ্রামের আবদুল হাই তালুকদারের ছেলে।
মির্জাপুর থানার ওসি এ কে এম মিজানুল হক জানান, মির্জাপুর রেলস্টেশনের কাছে স্থানীয় লোকজন রোহিঙ্গা ভেবে তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তারা গাজীপুরের মহিলা অধিদপ্তরের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে পালিয়ে এসেছে।