- খবর
- সেমিনারে বক্তারা কৃষিতে চরম বৈষম্যের শিকার নারীরা
খবর
সেমিনারে বক্তারা কৃষিতে চরম বৈষম্যের শিকার নারীরা
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০১৯
সমকাল প্রতিবেদক
গতকাল বুধবার 'নারীর ভূমি অধিকার, কৃষিতে অংশগ্রহণ এবং নারীর নিরাপত্তা' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। সংগঠনের চেয়ারপারসন নারীনেত্রী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাংসদ রাশেদ খান মেনন। সেমিনারের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সমকালের উপসম্পাদক আবু সাঈদ খান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।
সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন এএলআরডির উপপরিচালক রওশন জাহান মনি। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন চম্পা চাকমা, মনোয়ারা বেগম, লিপি ম্রং, মাকসুদা বেগম, মিথিলা চাকমা, চৈতি রিসিল প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে সেবা, শিল্প ও কৃষি অর্থনীতির এই তিন বৃহত্তর খাতে এক কোটি ৬৮ লাখ নারী সম্পৃক্ত। শুধু কৃষি খাতেই নিয়োজিত রয়েছেন ৯০ লাখ ১১ হাজার নারী। ২০১০ সালে এখানে নারীর অংশগ্রহণ ছিল ৬৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। একই সঙ্গে পারিবারিক খাতে নারীরা ৮০ ভাগেরও বেশি শ্রম দিচ্ছেন, যারা কোনো মজুরি পান না।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রাশেদ খান মেনন বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। একই সঙ্গে নারী শিশুদের ওপর শারীরিক নির্যাতনসহ ধর্ষণের ঘটনা চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। নারী শিশুর ওপর এমন বর্বর নির্যাতন বন্ধে সমাজের সর্বস্তরের লোকজনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নারীর বৈষম্যসহ সমস্ত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। আদিবাসী নারীদের দুঃখ আরও বেশি কঠিন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আদিবাসী নারীরা ভূমির কোনো অধিকারই পান না। কৃষিতে তাদের বঞ্চনা আরও তীব্র। কাজের ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা নেই বলেই চলে।
আবু সাঈদ খান বলেন, নারীদের সমঅধিকারই শেষ কথা নয়। তাদের এগিয়ে নিতে অগ্রাধিকার প্রয়োজন। সংবিধানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অগ্রাধিকারের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। তাই খাস জমি বণ্টন ও কৃষি ঋণের ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, সম্পত্তিতে সমঅধিকার আইনি ও সামাজিক উভয় বাধার মুখে নারীকে পড়তে হয়। তাই আইন পরিবর্তন ও মানসিকতার পরিবর্তন দুই আন্দোলনকে এক রেখায় মেলাতে হবে।
শামসুল হুদা বলেন, নারীরাই এক সময় কৃষিতে প্রায় শতভাগ ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমানে পুরুষরা বিভিন্ন কাজের সন্ধানে থাকায় কৃষি জমিতে চাষ ছেড়ে দিচ্ছেন। এর ফলে আবারও কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর সেই অধিকার বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে না।
সভাপতির বক্তব্যে খুশী কবির বলেন, নারীদের ক্ষেত্রে শুধু সমঅধিকারই নয়, বিশেষ বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে তাদের সমন্বয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে নারীদের অধিকার বাস্তবায়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।