প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২১
সাইফুল হক মোল্লা দুলু, কিশোরগঞ্জ
সরেজমিনে দেখা গেছে, একটার পেছনে আরেকটা ইজিবাইক থাকায় শিশু-বৃদ্ধরা সড়কের এপার থেকে ওপারে যেতে পারে না। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষও রাস্তা পারাপারের জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকছেন। এতে শহরবাসীর কর্মঘণ্টার অপচয় হচ্ছে। তা ছাড়া ইজিবাইকের কারণে শহরের বাসিন্দারা দীর্ঘ সময় ব্যয় করার পর বিরক্তি ও স্নায়বিক চাপ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন।
শহরের শোলাকিয়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া বলেন, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠায় দিন দিন শহরটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ইজিবাইক শহরবাসীর গলার ফাঁস হয়ে উঠেছে। ছোট একটা রাস্তাই পার হওয়া যায় না। প্রধান সড়ক স্টেশন রোড, একরামপুর সড়ক ও ঈশা সড়কে দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকে। এ অবস্থার দ্রুত অবসান হওয়া দরকার।
একাধিক পৌর কাউন্সিলর জানান, প্রতিদিনই শহরতলি ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে ইজিবাইক শহরে চলে আসে। এ কারণে ইজিবাইকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বাইরে থেকে আসা ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করা গেলে শহরের চাপ কমবে।
কয়েকজন ইজিবাইক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি ইজিবাইকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি থাকে। এ ব্যাটারিগুলো পুরোপুরি চার্জ হতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। এর বাইরে সারাদিন চালানোর জন্য দুপুরেও এক থেকে দুই ঘণ্টা চার্জে রাখতে হয়। এ জন্য প্রতিদিন একটি ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জে গড়ে ১২ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। প্রতি ইউনিটের জন্য পরিশোধ করতে হয় ১২ টাকা। অবৈধভাবে যারা এ কাজে জড়িত তাদের আট টাকা দিলেই হয়।
সদর থানার ওসি আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, ইজিবাইকের আধিক্য না কমালে শহরের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। তিনি বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসনে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচন। তাই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাসউদ বলেন, কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। নির্বাচনের জন্য আপাতত কাজে কিছুটা গতি কম। নির্বাচনের পর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ এবং নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।