বিশ্বঐতিহ্য তালিকায় সুন্দরবনকে টিকিয়ে রাখতে কৌশলগত পরিবেশ প্রভাব সমীক্ষা ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পায়নে অগ্রসর না হতে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিল ইউনেস্কো। তবে ৫৭টি পরিবেশবাদী সংগঠন বলেছে, এই পরামর্শ সরকার না মেনে সুন্দরবন ঘেঁষে ৩২০টি শিল্প স্থাপনার অনুমোদন দিয়েছে, যা এ বনকে ধ্বংসের মুখে ফেলবে। তাই এ ব্যাপারে ইউনেস্কোর জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে ৫৭টি সংগঠন। বৃহস্পতিবার সংগঠনগুলো জাতিসংঘের ওই সংস্থাকে চিঠি দিয়ে তাদের আরোপিত শর্ত মানা হচ্ছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানিয়েছে। একই সঙ্গে সমীক্ষার আগে দক্ষিণাঞ্চলের বড় শিল্পে বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ অনুৎসাহিত করতে ইউনেস্কোকে আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগঠনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, সুন্দরবনবিনাশী একের পর এক সরকারি পদক্ষেপে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। গত বছর জুলাইয়ে ইউনেস্কোর ৪১তম সভায় পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে, সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে একটি কৌশলগত পরিবেশ প্রভাব সমীক্ষা না করে বাংলাদেশ যেন সে এলাকায় কোনো শিল্পায়নের দিকে অগ্রসর না হয়। বনের নদীগুলোতে নৌ পরিবহন বাড়ানো ও ড্রেজিং করার আগে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করতে হবে। কিন্তু সরকার এসব পরামর্শ মানছে না। রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আইন পরিবর্তন করে লাল ক্যাটাগরির কারখানাগুলো এখন সবুজ কারখানায় পরিণত হয়েছে।

সুলতানা কামাল বলেন, মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে এ দেশ, দেশের সম্পদ, পরিবেশ ও জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য। সুন্দরবন বিশ্বের অনন্য সম্পদ। এ বন অনেক বড় বড় প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে মানুষ ও সম্পদ রক্ষা করেছে। তার মতে, দেশের বন-নদী-পরিবেশ রক্ষা না করতে পারলে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নও বাস্তবায়ন হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল ও আলমগীর কবির এবং সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. মোজাহেদুল ইসলাম।











মন্তব্য করুন