প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০১৯
স্পোর্টস ডেস্ক
তবে ফাইনালে না গেলে বিশ্বকাপে এ অঞ্চলের দলগুলো বরাবরই ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। শুধু বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই সেমিতে ছিল না উপমহাদেশের কোনো দল। সেবার অবশ্য শুধু ভারত আর পাকিস্তানই এ অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছে। কিন্তু এর পর থেকে কোনো আসরেই সেমি মিস করেনি উপমহাদেশ। শুধু সেমিফাইনাল আর ফাইনাল খেলাই নয়, এ অঞ্চলের দলগুলোর শিরোপা জেতার রেকর্ডও খারাপ নয়। এ পর্যন্ত চারবার শিরোপা এসেছে এ অঞ্চলে। যেখানে খেলাটির জনক ইংল্যান্ড আজ পর্যন্ত তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপার দেখা পায়নি। ১৯৮৩ সালে উপমহাদেশের প্রথম দল হিসেবে শিরোপা জেতে ভারত। এরপর ১৯৯২-তে পাকিস্তান, '৯৬-তে শ্রীলংকা আর ২০১১ সালে আবারও বিজয়ী হয় ভারত।
একসময়ের ব্রিটিশ উপনিবেশের অংশ এ অঞ্চলে রাজকীয় খেলা হিসেবে বিস্তার ঘটেছিল ক্রিকেটের। সে খেলা এখন ছড়িয়ে গেছে সাধারণ্যে। বিশ্বব্যাপীও ক্রিকেটের সমর্থকদের সিংহভাগ এ অঞ্চলের। গত বছর এক জরিপ করে আইসিসি জানিয়েছিল, বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের দর্শক সংখ্যা এক বিলিয়নের ওপরে। আর এর ৯০ শতাংশই উপমহাদেশের। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটে আর্থিক প্রভাবের দিক দিয়েও কম যায় না উপমহাদেশের দলগুলো। খেলাটি থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করা সেরা পাঁচ বোর্ডের তিনটিই এ অঞ্চলের। খেলাটির এ বিপুল জনপ্রিয়তাই বোধ হয় বিশ্ব আসরে সফল হতে সাহায্য করেছে এ অঞ্চলের দলগুলোকে।
অবশ্য অনেকেই জনমিতির হিসাবে সাফল্যের এ পরিসংখ্যান নাকচ করে দিতে পারেন। কিন্তু এ অঞ্চলের ইতিহাস আর ক্রিকেটীয় সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্তির বিষয়গুলো মাথায় রাখলে ক্রিকেটের কুলীন দেশগুলোর তুলনায় উপমহাদেশের দলগুলোর সাফল্য খাটো করে দেখা যাবে না কিছুতেই। তবে এবার কোনো সাফল্যগাথা রচিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফাইনালে উপমহাদেশের দলের না থাকা নিয়ে কোনো ক্রিকেট ট্র্যাজিকের কষ্ট লাগতেই পারে; কিন্তু এবার ভারতের বিদায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়নি উপমহাদেশের বাকি দেশগুলোর দর্শক কষ্ট পেয়েছেন। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক। উগ্র জাতীয়তাবাদের যুগে অঞ্চলভিত্তিক আবেগ আর কাজ করে না বললেই চলে। তার ওপর এ অঞ্চলের রাজনীতির কারণে ক্রিকেটের বড় মোড়ল ভারতের প্রতি অতটা সহানুভূতিও নেই কারও। ভারত থাকলে বরং বিদ্বেষটাই উথলে উঠত। তাই এখন নিখাদ ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে ফাইনাল উপভোগ করুন।