- শেষের পাতা
- যুবলীগ নেতার দখলে বনভূমি
শেষের পাতা
গভীর বনে পুকুর, হাঁসের খামার, বসতবাড়ি
যুবলীগ নেতার দখলে বনভূমি
ইজাজ আহ্মেদ মিলন গাজীপুর |
ইজাজ আহ্মেদ মিলন গাজীপুর
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০ । ০০:০০
আপডেট: ১২ আগস্ট ২০ । ০১:৪২
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০ । ০০:০০ । আপডেট: ১২ আগস্ট ২০ । ০১:৪২
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শিমলাপাড়ায় বনের জমি দখল করে গড়ে তোলা পুকুর ও হাঁসের খামার সমকাল
ক'দিন আগেও অসংখ্য শাল-গজারি গাছে ভরপুর ছিল বন বিভাগের এই জায়গাটি। নানা রকম বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণও ছিল গভীর এই গজারি বনের ভেতর। অথচ সময়ের ব্যবধানে সেই গহিন বনের ভেতরে গড়ে তোলা হয়েছে হাঁসের খামার, পুকুর খনন করে চাষ করা হচ্ছে নানা জাতের মাছ, রোপণ করা হয়েছে ধানের চারা। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শিমলাপাড়া বিট অফিস থেকে মাইলখানেক দূরের এ দৃশ্য দেখে বন বিভাগের দায়িত্বশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার মাওনা ইউনিয়ন যুবলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মাসুম মিয়া ও তার বাবা আবদুল হালিম প্রকাশ্যে বনের এ জায়গা দখল করে নিয়েছেন। সেখানে মাছের খামার, হাঁস পালন ও ধানের আবাদ করেছেন। শুধু তাই নয়, গড়ে তুলেছেন বসতবাড়িও। কৌশল করে পুরোনো টিনের ছাউনি দিয়েছেন ঘরে। যাতে মানুষ ধারণা করে এটা বেশ পুরোনো বাড়ি। অবশ্য অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মাসুম মিয়া দাবি করেছেন, সেখানে তাদের কিছু জোত-জমি আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জবরদখল করে নেওয়া প্রায় ৮ বিঘা বনভূমি বাঁশের বেড়া দিয়ে রেখেছেন মাসুম। এর ভেতরে এখনও বড় বেশ কয়েকটি গজারি গাছ রয়েছে। ছোট গাছগুলো কেটে ফেললেও বড় গাছগুলো কাটার সাহস দেখাতে পারেননি। ওই জায়গায় পেয়ারার বাগান করেছেন। এর ঠিক পরের অংশে রোপণ করেছেন ধানের চারা। খনন করেছেন বড় একটা পুকুর। দক্ষিণ দিকে হাঁসের খামার ও টিনশেড বসতঘর। বাঁশের বেড়ার ভেতরের অংশে পুকুরের চার দিকে আবার দেওয়া হয়েছে জালের বেড়া। স্থানীয়রা জানান, ক্ষমতার দাপটে মাসুম বনের ওই জায়গা দখল করে নিয়েছেন। বনের জায়গা জবরদখল করে নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন যুবলীগ নেতা মাসুম মিয়া ও তার বাবা আবদুল হালিম।
তারা বলেছেন, বনের জায়গার ভেতরেই তাদের কিছু জোত-জমি রয়েছে। নিচু জায়গার চারপাশে বন। পৈতৃক জমিতে পানি আটকিয়ে মাছ চাষ করা হয়েছে। তবে এর আশপাশের বন বিভাগের জায়গাগুলো তারা দখল করে নিয়েছেন। আবদুল হালিম বলেন, 'বন বিভাগের শত শত একর জায়গা মানুষ দখল করে রেখেছে। সেখানে তো কারও দৃষ্টি পড়ে না।' বন বিভাগের একজন সার্ভেয়ার জানান, বনের জমির পাশে কারও জমি থাকলেও যৌথ সীমানা নির্ধারণ ছাড়া সেখানে কোনো রকম স্থাপনা নির্মাণ করার সুযোগ নেই। অথচ দিব্যি বনের ভেতরে নিজের সামান্য জমি থাকার অজুহাতে কোটি কোটি টাকা মূল্যের বনভূমি দখল করে নিয়েছে তারা।
এলাকাবাসী বলছেন, যুবলীগ নেতা মাসুমের টার্গেট হলো ওই এলাকার পুরো জায়গাটাই জবরদখল করে নেওয়ার। সেই পরিকল্পনা নিইে মাসুম মাঠে নেমেছেন। অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাসুম।
স্থানীয় বন বিভাগ বলছে, রাতের আঁধারে বনের জায়গা দখল করে এ সব গড়ে তুলেছে তারা। শিমলাপাড়া বিট অফিসের দায়িত্বে থাকা কর্মকতা মোশারফ হোসেন বলেন, 'বিষয়টি দু-দিন আগে জেনেছি। খুব গোপনে বন ও ভূমিদস্যুরা কাজ করেছে। কেউ তাদের খবরও দেয়নি। তবে দু-একদিনের মধ্যে ওই দখল করে নেওয়া বনভূমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।'
মন্তব্য করুন