বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার দেশকে দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ করে ফেলেছে। তারা দেশের ব্যাংকিং সেক্টর ও শেয়ারবাজার ধ্বংস করেছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচারসহ সব খাতকে তারা ধ্বংস করেছে। দেশকে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করতে, পরনির্ভরশীল অর্থনীতি চালু করতে সরকার এসব করছে।

গতকাল শুক্রবার বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী জাতীয় উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে 'ব্যক্তি খাত বিকাশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মুক্তবাজার অর্থনীতি' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এত লুটপাটের মধ্যেও আওয়ামী লীগ একটা মিথ তৈরি করতে চায়। সেটা হচ্ছে- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটা রোল মডেল মধ্য আয়ের দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। এটা মিথ ছাড়া কিছু না।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সরকারের এই অপপ্রচারের বাইরে দেশের বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, এখন এ দেশে প্রায় ছয় কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। আজকে করোনার আঘাত সহ্য করতে পারছে না বাংলাদেশ, অর্থনীতি সহ্য করতে পারছে না। আজকে আরও দুই কোটি লোক নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। একদিকে কিছু লোক লুটপাট ও দুর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে দরিদ্র আরও দরিদ্র হচ্ছে।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে পুরো বিশ্ব মনে করত, বাংলাদেশ একটি তলাবিহীন ঝুড়ি, এটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এখান থেকে বাঁচানোর কোনো পথ নেই। সেখান থেকে জিয়াউর রহমান এই দেশকে তুলে নিয়ে এসেছিলেন। একটা পরিপূর্ণ অর্থনীতির দেশ হিসেবে, একটা সম্ভাবনাময় জাতি নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের দলকে সুসংগঠিত করতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিতে হবে এবং সব গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একীভূত করে হারানো গণতন্ত্রকে ছিনিয়ে আনতে হবে। খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ আছেন, তাকে মুক্ত করতে হবে, দেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে হবে।

ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। জাতীয় উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান বক্তব্য দেন।

মন্তব্য করুন