- শেষের পাতা
- কুয়েট ছাত্রলীগের সম্পাদকসহ ৯ ছাত্রকে বহিস্কার
শেষের পাতা
কুয়েট ছাত্রলীগের সম্পাদকসহ ৯ ছাত্রকে বহিস্কার
মামলা করবেন শিক্ষকের স্ত্রী

বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা নাহিয়ান
এদিকে, গঠিত ৫ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি শিগগির তাদের কাজ শুরু করবে।
কুয়েট কর্তৃপক্ষ শনিবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি গত ২ ও ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির আলোকে অসদাচরণের আওতায় সিন্ডিকেট ৯ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যাদের সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে তারা হচ্ছেন- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাদমান নাহিয়ান সেজান, কুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মো. তাহামিদুল হক ইশরাক, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মো. সাদমান সাকিব, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র আ স ম রাগিব আহসান মুন্না, ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার সম্পাদক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মো. রিয়াজ খান নিলয়, একই বিভাগের ফয়সাল আহমেদ রিফাত এবং মেটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. নাইমুর রহমান অন্তু।
এদিকে, শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে শুক্রবার ৫ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। নতুন কমিটিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আলহাজ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়। এ ছাড়া সদস্য করা হয় কুয়েটের অধ্যাপক ড. খন্দকার মাহবুব, খুলনা জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি (নূ্যনতম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদা সম্পন্ন) ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধিকে (নূ্যনতম সহকারী কমিশনার পদমর্যাদা সম্পন্ন)। তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন সমকালকে জানান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারকে শনিবার সকালে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতিনিধি দিলে শিগগির তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা সবাই হল ছেড়ে চলে গেছেন। ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে, গত বুধবার ড. সেলিমের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, তারা ওই শিক্ষকের মরদেহ ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে কারণে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
ড. সেলিম হোসেনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন সমকালকে জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে তিনি বাদী হয়ে মামলা করবেন। বর্তমানে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন। কুষ্টিয়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরে এখন তিনি চুয়াডাঙ্গায় বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। দু-এক দিনের মধ্যে খুলনায় এসে থানায় মামলা করবেন।
এ ব্যাপারে কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান সমকালকে বলেন, তারা শুক্রবার ৫ দফা দাবিতে কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। সেই স্মারকলিপিতে তদন্ত ছাড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তদন্ত করার আগেই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে তারা হতাশ হয়েছেন।
মন্তব্য করুন