মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার ত্রিমোহিনী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল গফুর দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়মের মধ্যে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন। ইতিমধ্যে অধ্যক্ষ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর মনিরামপুর উপজেলায় তার বাড়িতে অবৈধভাবে বোর্ড বসিয়ে চার শিক্ষককে নিয়োগ দেন। তারা হলেন- ইংরেজি শিক্ষক পদে মনিরামপুর উপজেলার চালকিডাঙ্গা গ্রামের মহিবুল্লাহ, ইবতেদায়ি জুনিয়র শিক্ষক পদে কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের ইকবাল হোসেন, সামাজিক বিজ্ঞান শিক্ষক পদে মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি আবদুল কাদেরের ছেলে হাসান বায়জিদ সুইট ও কৃষিশিক্ষা পদে কেশবপুর উপজেলার সানতলা গ্রামের মফিজুর রহমান। তাদের কাছ থেকে অধ্যক্ষ প্রায় ৫০ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে গোপনে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। দুই বছর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই চার শিক্ষক মাদ্রাসায় যোগদান করেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেলে মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে মির্জানগর হাম্মানখানার পাশে অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর গফুর গণপিটুনির শিকার হন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল গফুর বলেন, চার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে ত্রিমোহিনী ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আমার কাছে গত ১০ দিন ধরে সাত লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চেয়ারম্যানের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় চেয়ারম্যান ও তার তিন সহযোগী মুজিবর, সামছুর ও সিরাজ আমার গতিরোধ করে মির্জানগর হাম্মানখানা এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে মৌখিকভাবে এবং থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমান আনিস বলেন, চার শিক্ষকের নিয়োগকে কেন্দ্র করে অভিভাবক ও মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা আমার কাছে অভিযোগ করলে আমি উভয় পক্ষ নিয়ে বসার জন্য অধ্যক্ষকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু অধ্যক্ষ বসতে গড়িমসি করায় উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে মারধর করেছে। সাত লাখ টাকার বিষয়ে অধ্যক্ষ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা একেবারেই বানোয়াট।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহীন বলেন, ত্রিমোহিনী মাদ্রাসার অধ্যক্ষের একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মন্তব্য করুন