প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০১৯
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আমতলী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রিজসংলগ্ন খালপাড়ের একটি ভাড়া বাসায় স্বামী রিকশাচালক জুয়েল ও মেয়ে মনিকাকে নিয়ে বাস করেন আমতলী পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী শাহনাজ বেগম। তাদের একমাত্র সন্তান হচ্ছে মনিকা (১১)।
শুক্রবার রাত ৮টায় মনিকার মা শামীমের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন করেন। এ বিয়েতে মনিকার বাবা রাজি ছিলেন না বলে জানায় মনিকা। নিজের বিয়ের এ আয়োজন দেখে চমকে যায় সে এবং এ বিয়ে বন্ধের জন্য স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী কনিকার সহযোগিতায় সোজা চলে যায় থানায়। সেখানে দেখা হয় এসআই নাসরিনের সঙ্গে। তার কাছে মনিকা সব কথা খুলে বলে। তাৎক্ষণিক এসআই নাসরিন কয়েকজন ফোর্স এবং মনিকা ও তার দুই সহপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিয়ের সব আয়োজনের সত্যতা পান। এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ চন্দ্র মজুমদার। তিনি মনিকার মাকে ডাকেন এবং বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেন। মনিকার মা তা বুঝতে পেরে মেয়েকে আর বাল্যবিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দেন। মনিকার মা শাহনাজ বেগম বলেন, 'আমরা না বুইজ্যা মাইয়ারে বিয়া দিতে চাইছিলাম। স্যারে আইয়া মোগো সব বুঝাইয়া কওনে মোরা এহন মাইয়ারে আর বিয়া দিমু না। মাইয়ারে এহন লেহাপড়া করামু, বড় করমু। হেইয়ার পর বিয়া দিমু।' মনিকা বলেন, 'বিয়া মুই বুঝি না। মুই লেহাপড়া কইর্যা বড় অমু। হেইয়্যার পর পুলিশে চাকরি করমু। চাকরি কইর্যা এই রহম কাম যাতে কেউ করতে না পারে, হেইয়্যার ব্যবস্থা নিমু।'
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন, 'মেয়েটির প্রশংসা করতে হয়। ছোট মেয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই বন্ধ করেছে। সবাই যদি এ রকম হতো, তাহলে সমাজে আর বাল্যবিয়ে থাকত না।'