প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০১৭
ছাতক প্রতিনিধি
ছাতক পৌরসভার বাগবাড়ী আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ টিলার অবস্থান। ১৭৭৪ সালে এইচটি রাইট ও জর্জ ইংলিশ নামের দু'জন ব্রিটিশ ব্যবসার জন্য ছাতকে এসে 'রাইট ইংলিশ কোম্পানি' নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তারা কোম্পানির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে পাথর, চুন, তেজপাতা ও কমলালেবু সরবরাহ করতেন। ১৮১৯ সালে এইচটি রাইট ছাতকে মারা যান। পরে রাইটের স্ত্রীর কাছ থেকে ব্যবসার অংশ ক্রয় করেন জর্জ ইংলিশ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি 'জর্জ ইংলিশ কোম্পানি' নামে নামকরণ করা হয়। জর্জ ইংলিশ মারা যাওয়ার পর তার পুত্র হেনরি ইংলিশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে তারা ব্যবসা বন্ধ করে এ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যাওয়ার আগে মিসেস জর্জ ইংলিশ স্বামীর সমাধিস্থল টিলার উপরে স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করেন। মিনারের চারপাশে কারুকাজের রেলিং এখন ভেঙে গেছে। ১৮৯৪ সালের ভূমিকম্পে স্তম্ভের কিছু অংশে ফাঁটল ধরে যায়। ১৯৫০ সালের সেটেলমেন্ট জরিপে এ টিলার অংশটি খাস খতিয়ানভুক্ত করা হয়। টিলার দখল ও বন্দোবস্ত নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে টিলার উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। টিলার উত্তর দিকে খুপরি ঘরগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। টিলার ঢালে বসবাসকারী এক দরিদ্র নারী নাজমা বেগম। দুটি সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করে আসছেন। তিনি বলেন, 'আমরা গরিব মানুষ, কই যাইমু। সরকার যদি জায়গা দিত, তাহলে আমরার একটা উপায় হইতো'।
টিলার নিচে বসবাসকারীদের নোটিশ দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হলেও কোনো পরিবারই এসব নোটিশে গুরুত্ব দিচ্ছে না। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন টিলার সার্বিক পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শনের পর টিলার নিচে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে বলেছে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির উল্লা খাঁন বলেন, এই টিলায় চতুর্দিকে বসবাসকারী পরিবারগুলো অতিবৃষ্টির কারণে অধিক ঝুঁকির মধ্যে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ টিলা নিয়ে পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।