- আন্তর্জাতিক
- এবার চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রশ্নে ভোটাভুটি
আন্তর্জাতিক
এবার চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রশ্নে ভোটাভুটি
তেরেসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসতে (ব্রেক্সিট) আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। ২০১৬ সালের গণভোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে গত নভেম্বরে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিলেন তেরেসা। সে ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও গত জানুয়ারির ভোটাভুটিতে তা প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে ব্রিটিশ এমপিরা তেরেসা মেকে তার প্রস্তাবের সংশোধনী আনতে ইইউর সঙ্গে নতুন করে আলোচনার সুযোগ দেন। সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর তেরেসা দাবি করেন, পরিকল্পনায় 'আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক' পরিবর্তন আনতে সমর্থ হয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সে তেরেসার সে সংশোধিত পরিকল্পনাটি নিয়ে আবারও ভোটাভুটি হলেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়। ভোটের আগে নতুন করে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির ৪০ জন এমপিকে তেরেসা মে তার সংশোধিত প্রস্তাবের ব্যাপারে রাজি করাতে পারলেও ওই প্রস্তাব পাস করাতে পারেননি তিনি। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৯১ জন আর পক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৪২ জন। ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর তেরেসা বলেন, এমপিদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি ব্রেক্সিট বিলম্বিত করতে চান, নাকি আরেকটি গণভোট চান, নাকি তারা এ চুক্তি বাদে অন্য কোনো চুক্তি করে ব্রেক্সিট চান।
সংশোধিত প্রস্তাব পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা 'এখন আগের চেয়ে আরও বেশি জরুরি'।
তেরেসা মের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এখন চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোনো চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসবে কি-না সে প্রশ্নে বুধবার রাতে ভোটাভুটি করে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। ভোটাভুটির জন্য উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, '২৯ মার্চের পর সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে রূপরেখা তৈরি না করে এবং কোনো চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে হাউস।'
যদি চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট পরিকল্পনাও প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে আর্টিক্যাল ফিফটির সময়সীমা বাড়িয়ে ব্রেক্সিট বিলম্বিত করার ব্যাপারে ভোটাভুটি হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার আইনি প্রক্রিয়াই হলো আর্টিক্যাল ফিফটি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, আর্টিক্যাল ফিফটির মেয়াদ বাড়ানোর আগে তাদের 'একটি নির্ভরযোগ্য পর্যালোচনা'য় যেতে হবে। লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, এখন তেরেসা মের উচিত সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেওয়া। চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটকে আলোচনার টেবিল থেকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
করবিন জানিয়েছেন, বিকল্প ব্রেক্সিট পরিকল্পনা উপস্থাপন করে যাবে তার দল। তবে লেবার পার্টি ব্রেক্সিট প্রশ্নে আরেকটি গণভোটকে সমর্থন জানাবে কি-না সে ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেননি তিনি।
এদিকে মের মুখপাত্র বলেছেন, ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নতুন করে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর পদত্যাগ প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। কারণ, তার নেতৃত্বাধীন সরকার সম্প্র্রতি হাউস অব কমন্সে আস্থা ভোটে জয় পেয়েছে। ইইউর কাছ থেকে আর কোনো ছাড় পাওয়ার জন্য তেরেসার ব্রাসেলসে যাওয়ার পরিকল্পনাও নেই।
আরও পড়ুন
মন্তব্য করুন