- আন্তর্জাতিক
- নেতাজির জন্মদিনে মোদির কলকাতা সফর, উত্তেজনা
আন্তর্জাতিক
টার্গেট বিধানসভা নির্বাচন
নেতাজির জন্মদিনে মোদির কলকাতা সফর, উত্তেজনা
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বিজেপি-তৃণমূলের, কলকাতাকে রাজধানী করার দাবি মমতার
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২১
কলকাতা প্রতিনিধি

বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে তুমুল বিরোধিতা সত্ত্বেও কলকাতায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শনিবার এক মঞ্চে দেখা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার বিকেলে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য মমতাকে ডাকেন সঞ্চালক। তখন তিনি মঞ্চের চেয়ার ছেড়ে পোডিয়ামের দিকে এগোতেই বিজেপির কর্মীরা 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দিতে শুরু করেন, যা শুনে দৃশ্যতই বিরক্ত হন মমতা। খানিক বিব্রত সঞ্চালক বলেন, 'আপনারা শান্ত হোন। তাকে কথা বলতে দিন।' পরে ক্ষুব্ধ মমতা পোডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমেই হিন্দিতে বলেন, 'আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানের একটা শালীনতা থাকা উচিত। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়। এটা সব দলেরই কর্মসূচি, জনতার কর্মসূচি।'
মমতা আরও বলেন, 'আমায় এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে অসম্মান করাটা শোভনীয় নয়। এর প্রতিবাদে আমি এখানে কিছু বলছি না। জয় হিন্দ! জয় বাংলা!' এর পরেই মমতা পোডিয়াম ছেড়ে নিজের আসনে বসেন। এ সময় সেখানে নীরবে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
মমতার পরেই বক্তব্য দিতে গিয়ে তাকে বোন সম্বোধন করে মোদি তার ভাষণ শুরু করেন। কিন্তু তাতেও গোটা অনুষ্ঠানের ছন্দ ফিরে আসেনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ ভারত করোনা মহামারিতে বিভিন্ন দেশকে সহায়তা করছে- এটা দেখলে অবশ্য গর্ববোধ করতেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। তিনি আরও বলেন, এই বাংলার পুণ্যভূমি দেশকে দেশপ্রেম শিখিয়েছে।
এর আগে শনিবার সকালে নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে টুইট করেছেন নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটবার্তায় তিনি লিখেছেন, 'মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ভারতমাতার সত্যিকারের পুত্র নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনে শত প্রণাম। দেশের স্বাধীনতার জন্য তার ত্যাগ এবং আত্মনিবেদন সব সময় স্মরণ করা হবে।' এর পর হ্যাশট্যাগ করে লিখেন 'পরাক্রম দিবস।' অন্যদিকে, এর আগে সকালে টুইট করে মমতা লিখেছেন, "দেশনায়কের জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধা জানাই। তিনি ছিলেন প্রকৃত নেতা। মানুষের ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন। আমরা আজকের দিনটা 'দেশনায়ক দিবস' হিসেবে পালন করছি।"
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দ্বিতীয় টুইটে লিখেছেন, 'রাজারহাটে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। নামকরণ হবে আজাদ হিন্দ ফৌজের নামে। এ ছাড়া নেতাজির নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থাপন করা হবে।' এরপর তৃতীয় টুইটে বিভিন্ন কর্মসূচি লেখেন তিনি। সেই সঙ্গে মমতা আরও একবার ২৩ জানুয়ারি জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এর পর তিনি হ্যাশট্যাগ করে লেখেন 'দেশনায়ক দিবস'।
এদিন মূলত মোদি সরকারের 'দিল্লিকেন্দ্রিকতা'র বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন মমতা। আর তার জন্য দিল্লিনির্ভরতার বাইরে বেরিয়ে কলকাতাসহ দেশের চার প্রান্তে চারটি রাজধানী করার দাবি তুলেছেন তিনি। এ নিয়ে সংসদে দলীয় সাংসদদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এই দাবি ভারতে এর আগে কোনো রাজনৈতিক নেতা করেননি।
এদিন কলকাতার শ্যামবাজার থেকে রেড রোড পর্যন্ত দীর্ঘ পদযাত্রা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মিছিলের শেষে তিনি দাবি তোলেন ভারতের দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব এই চারটি প্রান্তে চারটি রাজধানী করার।